বর্তমানে অনেকেই চান একটু বাজেট বাড়িয়ে ভালো একটি ফোন কেনার। কিন্তু, মন মতো পাওয়াটাই হচ্ছে ঝামেলা। হয়তো আপনার সেই একটু বাড়ানোর বাজেটকে বাড়াতে হবে আরেকটু। আপনার তো এখন সেই বাজেট নেই। মিড বাজেটের ফোনে অনেক সময় দরকারী কিছু পাওয়া যায় না। এজন্যই কিছু বাড়িয়ে এর থেকেও ভালো একটি ফোন কেনার রিকমেন্ডেশন থাকে সবারই। কিন্তু, কোনটা ভালো হবে সেটা নিয়েই থেকে যায় কনফিউশন। সেই কথা মাথায় রেখেই ‘শাওমি’ বাজারে তাদের নতুন ফোন রিলিজ করে। যেটার মডেলের নাম ‘এমআই ১১’। ২০২০ সালের, ডিসেম্বর মাসের ২৮ তারিখে ‘শাওমি’ তাদের এই মডেলটি বের করে। আজ কথা হবে এই মডেলটি নিয়েই।
কথা আর না বাড়িয়ে চলুন নিচে গিয়ে দেখে আসা যাক এর ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু তথ্যঃ⤵️
বডিঃ
ফোনটির বডি ডিমেনশন হচ্ছে ১৬৪.৩×৭৪.৬×৮.১ মি.মি.। ফোনটির মোট ওজন ১৯৮ গ্রাম। ফোনটির ডিসপ্লেতে দেয়া হয়েছে গ্লাস। যেটা ‘গরিলা গ্লাস ভিক্টাস’ সমৃদ্ধ। পিছনে দেয়া হয়েছে ‘গরিলা গ্লাস ৩’ এর প্রটেকশন। ফোনের ফ্রেমটি হচ্ছে অ্যালুমিনিয়ামের। থাকছে ডুয়্যাল সিম ব্যাবহারের সুবিধা। শুধুমাত্র ন্যানো সিম ব্যাবহার করা যাবে এই সিম স্লটে।
ডিসপ্লেঃ
‘শাওমি’ তাদের এই মডেলটিতে দিয়েছে ৬.৮১ ইঞ্চির বিশাল এক ডিসপ্লে। যেটা অ্যামোলেড এবং কার্ভিং করা। স্ক্রিন থেকে এর বডির রেশিও ৯১.৪%। এই ডিসপ্লের রেজুলেশন হচ্ছে ১৪৪০×৩২০০ পিক্সেলের। যেটা ৫১৫ পিপিআই ডেনসিটির। সাথে গরিলা গ্লাসের প্রটেকশন তো থাকছেই।
প্লাটফর্মঃ
ফোনটির প্লাটফর্মে রয়েছে ‘অএস এন্ড্রোয়েড ১১, এমআই ইউআই ১২.৫’ ভার্সন। এর প্রসেসর হচ্ছে ‘কোয়ালকম এসএম৮৩৫০ স্ন্যাপড্রাগন ৮৮৮’। যেটা ৫ ন্যানোমিটারের। সিপিইউ তে থাকছে ‘অক্ট্যা কোর কেআরওয়াইও ৬৮০’। জিপিইউতে থাকছে ‘এদ্রেনো ৬৬০’।
ক্যামেরাঃ
ব্যাকঃ ‘শাওমি’ তাদের এই ফোনের মডেলের পিছনে দিয়েছে তিনটি ক্যামেরা। সেগুলো হচ্ছে ১০৮ মেগাপিক্সেলের ওয়াইড, ১৩ মেগাঃ’র আল্ট্রাওয়াইড এবং ৫ মেগাঃ’র মেক্রো সেন্সর। আরও থাকছে ‘এইচডিআর প্যানোরামা’র সাথে ‘ডুয়্যাল এলইডি ফ্ল্যাশ’। এই ক্যামেরা গুলো দিয়ে রেকর্ড করা যাবে ৮কে রেজুলেশনের ভিডিও। যেটা এই ফোনের অন্যতম সেরা একটি পরিবর্তন।
ফ্রন্টঃ এই ফোনের সামনে রয়েছে ২০ মেগাপিক্সেলের একটি ওয়াইড প্যানেলের ক্যামেরা। এটিও ‘এইচডিআর প্যানোরামা’ যুক্ত। তবে থাকছে না কোনো ফ্ল্যাশ। এই ক্যামেরা দিয়ে সর্বোচ্চ ১০৮০’পি কোয়ালিটির ভিডিও রেকর্ড করা যাবে।
মেমোরীঃ
‘শাওমি’ তাদের এই ফোনের মডেলটি বাজারে ছেড়েছিলো তিনটি ভ্যারিয়্যান্টে। সেগুলো হচ্ছে ৮/১২৮, ৮/২৫৬ এবং ১২/২৫৬ জিবির ভ্যারিয়্যান্ট। ‘শাওমি’র এই ফোনটিতে থাকছে না কোনো মেমোরি কার্ড স্লট।
নেটওয়ার্কঃ
‘শাওমি’ এবার তাদের নেটওয়ার্ক স্পিড পরিবর্তন করে দিয়েছে ৫জি। যেটাও একটি অসাধারন পরিবর্তন। এদের নেটওয়ার্ক টেকনোলজিতে থাকছে ‘জিএসএম / সিডিএমএ / এইচএসপিএ / ইভিডিও / এলটিই / ৫জি।
সাউন্ডঃ
সাউন্ড সেগমেন্টে ফোনটি ছিলো একেবারে ক্রিস্ট্যাল। যেকোনো ধরনের মিউজিক খুব ক্লিয়ারভাবেই শুনতে পাওয়া যাচ্ছিলো। ‘স্টেরো স্পিকারে’র এই স্পিকারে লাউড আওয়াজেও খুব ক্লিয়ারভাবেই বেজেছিলো সাউন্ডট্র্যাকগুলো। থাকছে বা ৩.৫ মি.মি. ইয়ারফোন জ্যাক।
ব্যাটারীঃ
এই ফোনটির ব্যাটারী দেয়া হয়েছে ৪৬০০ এমএইচের। সাথে দেওয়া হয়েছে ৫৫ ওয়াটের ফাস্ট চার্জার। যেটা দিয়ে ফোনটি ফুল চার্জিং করতে সময় নিবে মাত্র ৪৫ মিনিট। এটিও অসাধারণ একটি পরিবর্তন ছিলো এই ফোনটির।
ফিচারঃ
এই ফোনের সেন্সরে রয়েছে ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’। যেটা রাখা হয়েছে ‘ইন ডিসপ্লে’ টাইপে। অ্যামেলেড প্যানেলে থাকা এই সেন্সরটি ভালোই ফাস্ট ছিলো।
যেসব পরিবর্তন রয়েছে এই ফোনেঃ
‘শাওমি’ তাদের এই ফোনে এনেছে অনেক পরিবর্তন। নেটওয়ার্ক, ৩.৫ মি.মি. ইয়ারফোন জ্যাক না দেয়া, কোনো মেমোরি কার্ড স্লট না রাখা, ৮কে ভিডিও রেকর্ডিং অপশন রাখা, ডিসপ্লে কার্ভিং করে দেয়া এবং রেজুলেশন বাড়িয়ে দেয়াটাই ছিলো এই ফোনের পরিবর্তিত কিছু বিষয়। যেটা বর্তমান যুগে দারুন একটি বিষয়।
দামঃ
‘শাওমি’ এই ফোনের মডেলটির অফিসিয়াল কোনো ভ্যারিয়্যান্ট এখনও পাওয়া যায়নি বাংলাদেশে। আন্তর্জাতিক দাম অনুযায়ী এর দুইটি ভ্যারিয়্যান্ট পাওয়া যাচ্ছে এদেশে। সেগুলোর দাম হচ্ছে ৮/১২৮ – ৳৫২,৫০০ এবং ৮/২৫৬ – ৳৫৬,৫০০।