প্রতিটা কাস্টমার মিট আপ নতুন অভিজ্ঞতার জন্ম দেয়। কাস্টমার মিট আপ এক দিকে যেমন নেটওয়ার্কিং শক্ত করে, অন্যদিকে কমিউনিকেশন স্কীল বৃদ্ধির মাধ্যমে নতুন কিছু শেখার দ্বার উন্মোচন করে। কাস্টোমার মিট আপ শুধু একজন বিক্রেতার বিক্রি বা পরিচিতিই বৃদ্ধি করে না বরং তাঁর ক্রেতাদের মধ্যে একটা শক্ত বন্ধন তৈরি করতে সাহায্য করে।
আমি প্রথম মিট আপে অংশগ্রহণ করি দেলোয়ার ভাইয়ের “আওয়ার শেরপুর” এর কাস্টমার মিট আপে। সেখানে গিয়ে অনেকের সাথেই দেখা হয় যাদেরকে শুধু মাত্র অনলাইনে দেখেছি, চিনেছি। সামনাসামনি তাদের সাথে দেখা হওয়াটা বেশ আনন্দের ছিল। আমি অনেককে চিনেছি, অনেকে আমালে চিনেছে। মিট আপে গিয়ে বুঝেছি শুধু ডিএসবি গ্রুপে নিয়মিত লেখার কারণে অনেকেই আমাকে চিনেছে, আমিও অনেককে চিনেছি। এটা পারসোনাল ব্র্যান্ডিং এর অনেক বড় একটা দিক।
কাস্টোমার মিট আপে আমার সবচেয়ে ভালো যেটা লাগে, সেটা হচ্ছে বিভিন্ন ক্রেতাদের অভিজ্ঞতা শুনতে পারা। একেকজন ক্রেতা তাদের পণ্য কেনার অভিজ্ঞতা বলেন। পাশাপাশি তিনি নিজে যদি উদ্যোক্তা হন, সেই উদ্যোগ নিয়েও সকলকে জানাতে পারেন। মানে, আমি একজন ক্রেতা হয়েও কাস্টোমার মিট আপে গিয়ে নিজের উদ্যোগ এবং পণ্যের বিষয়ে এলিভেটর পিচ দিতে পারি। এতে ক্রেতার উদ্যোগের প্রচার এবং প্রসার অনেক সহজ হয়। খুব কম সময়ে অনেক বেশি মানুষের কাছে নিজের পরিচয় তুলে ধরা যায়।
কাস্টমার মিট আপের আরেকটা সুন্দর দিক হচ্ছে স্পন্সর হিসেবে অন্য উদ্যোগকে নিজের পরিচিত বাড়ানোর জন্য স্পেস দেওয়া হয়। কেউ চাইলে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার মাধ্যমে মিট আপে স্টল নিতে পারেন। স্পন্সররা মিট আপে যে স্টল পান সেখানে নিজেদের পণ্য প্রদর্শন করতে পারেন।এতে করে যারা মিট আপে আসেন তারা স্পন্সরদের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে পারেন৷ একজনের ক্রেতা হিসেবে মিট আপে অংশ নিলেও অন্যদের ক্রেতা হয়ে ওঠেন খুব সহজেই। আমরা সবসময় যেটা আশা করি, একজন উদ্যোক্তা অন্য একজন উদ্যোক্তাকে সাপোর্ট করবেন সবসময়। এই কাস্টমার মিট আপে এই সাপোর্টটা খুব বেশি দেখা যায়।
এই কাস্টমার মিট আপের আইডিয়াটা রাজিব স্যার যখন দিয়েছেন তখন অনেকেই ভাবে নি এই আইডিয়া এতো ভালো একটা ফলাফল নিয়ে আসতে পারে৷ তবে স্যারের ডেডিকেশন এবং আইডিয়া নিয়ে কাজ করা দেখে শিখেছি কোনো আইডিয়া নিয়ে একনিষ্ঠভাবে চেষ্টা করলে সেই আইডিয়া সফল হওয়ার সুযোগ অনেক বেড়ে যায়।
পুরো কাস্টোমার মিট আপের বেস্ট পার্ট হচ্ছে রাজিব আহমেদ স্যারের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা পাওয়া৷ স্যার প্রতিটি মিট আপেই মিট আপ অর্গানাইজার, স্পন্সর এমন কী নতুন উদ্যোক্তাদের সুযোগ দেন কথা বলার। পাশাপাশি সবার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা যেন আমরা নিজেদের উদ্যোগ নিয়ে আরো ভালো কিছু করতে পারি৷ একদম স্পেসিফিক্যালি বললে, নেটওয়ার্কিং বা পারসোনাল ব্র্যান্ডিং যত যাই বলি না কেন, আমরা মিট আপে অংশ নেই স্যারের এই অমূল্য পরামর্শ শোনার জন্য৷ আর ই-কমার্স এবং বিজনেস ডেভেলপমেন্টের জন্য স্যারের দেওয়া পরামর্শ যারা অনুসরণ করেছেন তারা প্রত্যেকেই বিজনেসে উন্নতি করেছেন। কাস্টোমার মিট আপে অংশ নিলে এই পরামর্শ পাওয়া যায় একদম বিনামূল্যে৷
আমার জন্য প্রতিটি কাস্টোমার মিট আপই শেখার একটা বড় প্ল্যাটফর্ম। অনেকের কাছে এটাকে সময় নষ্ট বা টাকা নষ্ট মনে হতে পারে কিন্তু এই কাস্টোমার মিট আপের ফলাফল সুদুরপ্রসারি। সেই ফলাফল আমরা এখন থেকেই দেখতে পাচ্ছি।
মুনির হোসাইন
সিইও এবং কো-ওনার, রেডিমিট বিডি