বিশ্বে মোটামুটি দুই ধরনের মানুষ আছে: কিছু মানুষ প্রতিরাতে ল্যাপটপ বন্ধ করে ঘুমায় এবং কিছু মানুষ বন্ধ না করেই রেখে দেয়। চার্জ ধরে রাখতে এবং হার্ডওয়্যার নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচতে কোনটি ভালো তা নিয়ে হয়তো নানা রকম বক্তব্য শুনে থাকবেন। আজ আমরা সে বিষয়টি পরিষ্কার জানবো।
কম্পিউটার অব্যবহৃত অবস্থার তিনটি লেভেল থাকে: স্লিপ, হাইবারনেট এবং শাট ডাউন।
ইলেকট্রনিক্স প্রতিষ্ঠান গিক স্কোয়াডের কর্মকর্তা ডেরেক মেস্টার বলেন, স্লিপ মোডে কম্পিউটার কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তবে এর আগে আপনি যে কাজ করছিলেন তা সংরক্ষণ করে রাখে, যেন আপনি ফিরে এসে আবার আগের জায়গা থেকেই কাজ শুরু করতে পারেন। হাইবারনেট মোডও একই কাজ করে। শুধু দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ হওয়া এবং কম শক্তি খরচের জন্য তুলনামূলক বেশি প্রোগ্রাম বন্ধ করে।
প্রযুক্তি পণ্য সার্ভিসিং প্রতিষ্ঠান স্টেমোবাইলের কারিগরি কর্মকর্তা ব্র্যাড নিকোলস বলেন, এই দুই মোডে মূল যে পার্থক্যটা দেখা যায় সেটি হলো, কম্পিউটার পুনরায় চালু করার সময়টা। স্লিপ মোডে কম্পিউটারের মাউস নড়াচড়া করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সেটি চালু হয়ে যাবে। তবে হাইবারনেট মোড থেকে ফিরে আসতে কয়েক মিনিটও লাগতে পারে। আর শাট ডাউন মোড মানে কম্পিউটারটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে এবং আর কোনোভাবে চার্জও খরচ হচ্ছে না। ডিভাইস সঠিক নিয়মে চার্জ দিলে এর ব্যাটারি বেশি স্থায়ী হয়।
আপনি হয়তো শুনেছেন, শাট ডাউন এবং বুট আপের সময় সিস্টেমে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চাপ পড়ার কারণে কম্পিউটার অনেক বেশি শক্তি ব্যবহার করে। এটা পুরোনো মডেলগুলোর ক্ষেত্রে সত্য হতে পারে, তবে আধুনিক কম্পিউটারে কোনও সমস্যাই নয়।
মেস্টার বলেন, আপনি পুরোনো কম্পিউটারে পাখা ঘোরার জোরালো শব্দের কথা মনে করতে পারেন, তবে নতুন মডেলগুলোতে আধুনিক যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি কম্পিউটার শাটডাউন দেওয়ার পদ্ধতিকে আরো সহজ করে তুলেছে।
তিনি বলেন, ‘আধুনিক কম্পিউটার ব্যবহারের চেয়ে আসলে চালু হওয়া বা শাটডাউনে খুব বেশি শক্তি লাগে না।’
স্লিপ মোড কম্পিউটার শাটডাউনের তুলনায় হয়তো একটু বেশি শক্তি খরচ করে, তবে পার্থক্যটা একেবারেই নগণ্য। এতে হয়তো এক ডলারের মতো বিদ্যুৎ বিল বাঁচতে পারে বলে মনে করেন মেস্টার। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি খরচ কমানোর কথাই চিন্তা করেন, তাহলে যখন ল্যাপটপ ব্যবহার করছেন না সেময়টায় চার্জার খুলে ফেলুন বা প্রিন্টারটা বন্ধ করে রাখুন।’
মেস্টার বলেন, আপনাকে যদি কম্পিউটার ছেড়ে বারবার উঠতে হয়, তবে স্লিপ মোডে রেখে যেতে পারেন। এতে আপনার কাজ সংরক্ষিত থাকবে, কোনো ক্ষতিও হবে না।
যদি ল্যাপটপ বেশিরভাগ রাতেই স্লিপ মোডে রাখেন, তবে সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও সেটি শাটডাউন করা উচিৎ বলে মনে করেন নিকোলস এবং মেস্টার দুজনেই। কম্পিউটার যত বেশি ব্যবহার করবেন, ব্যাকগ্রাউন্ডে ক্যাশেড কপি থেকে তত বেশি অ্যাপ্লিকেশন চলতে থাকবে।
নিকোলস বলেন, কিছু জিনিস রিসেট করতে হবে যাতে তারা সবসময় না চলে। তিনি বলেন, ‘এটি একেবারেই সময়নির্ভর। আপনি যত বেশি কম্পিউটার ব্যবহার করবেন, ততই ধীর হয়ে যাবে।’
এছাড়া, সপ্তাহে একবার শাটডাউন ডাউনের মাধ্যমে সিস্টেমে বাগ এড়ানো যায়। নিকোলস বলেন, কম্পিউটারে এমন কিছূ সমস্যা আছে যেগুলো একটি সাধারণ রিসেট-এর মাধ্যমেই সংশোধন করা যায়। আর এটি একটি অভ্যাসে পরিণত করতে পারলে ওইসব সমস্যা কুঁড়িতেই বিনষ্ট হবে।
তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট