কয়েক মাস ধরে নানা জল্পনা-কল্পনার পর নতুন দুটি ফোন আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করল চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট হুয়াওয়ে। ‘পি৩০’ ও ‘পি৩০ প্রো’ নামে দুটি ফোনেই রয়েছে অসাধারণ কিছু ফিচার। নিজস্ব নকশার প্রসেসরবিশিষ্ট ফোন দুটির প্রধান বিশেষত্ব ক্যামেরা। হুয়াওয়ের দাবি, হালের সবচেয়ে উন্নত ক্যামেরা সংযোজন করেছে তারা।
গত মঙ্গলবার প্যারিসে নতুন ফোনের উন্মোচন অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ের কর্মকর্তারা বলেন, ক্যামেরায় সংযোজন করা হয়েছে নিজস্ব সুপার স্পেকট্রাম সেন্সর। এর ফলে আলোক সংবেদনশীলতা অবিশ্বাস্য রকম বেড়েছে।
এদিন ফোনের পাশাপাশি এয়ারবাড, পাওয়ার ব্যাংক ও স্মার্টওয়াচও উন্মোচন করে হুয়াওয়ে।
স্পেসিফিকেশন: দুটি ফোনই অ্যান্ড্রয়েডের সর্বশেষ সংস্করণ অ্যান্ড্রয়েড ৯ পাই অপারেটিং সিস্টেমচালিত এবং ইউজার ইন্টারফেস হুয়াওয়ের সর্বশেষ হালাগাদ সংস্করণ ইএমইউআই ৯.১। দুটি ফোনই ডুয়াল সিম ও ডুয়াল ফোরজি সমর্থন করে। ডিউড্রপ নচবিশিষ্ট ডিসপ্লে প্রায় বেজেলহীন। ফুল এইচডি প্লাস ওএলইডির বড় এবং হাই রেজল্যুশন ডিসপ্লেতে রয়েছে ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সর। পি৩০ প্রোতে রয়েছে অ্যাকস্টিক ডিসপ্লে টেকনোলজি। অর্থাৎ এলজির জি৮ থিনকিউ ফোনের মতো এ ফোনে রয়েছে ইন-স্ক্রিন স্পিকার।
দুটি ফোনেই ব্যবহার করা হয়েছে হুয়াওয়ের নিজস্ব কিরিন ৯৮০ এসওসি অক্টাকোর প্রসেসর। বিশ্বের প্রথম ৭ ন্যানোমিটার এআই মোবাইল চিপ বলা হচ্ছে এটিকে। সঙ্গে রয়েছে মালি জি৭৬ জিপিইউ। প্রসেসরে সংযোজন করা হয়েছে দুটি নিউরাল প্রসেসিং ইউনিট (এলপিইউ), এর ফলে দ্রুত ছবি শনাক্তকরণসহ মেশিন লার্নিং-সংশ্লিষ্ট কাজগুলো আরো দক্ষতার সঙ্গে করতে পারবে পি৩০ প্রো।
পি৩০-এর র্যাম ৬ জিবি, বিল্টইন স্টোরেজ ১২৮ জিবি। পি৩০ প্রোর র্যাম ৮ জিবি এবং স্টোরেজ ১২৮/২৫৬/৫১২ জিবি। দুটিতেই রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি। তবে ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধা শুধু প্রোতেই রাখা হয়েছে। দুটি ফোনেরই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে যুক্ত করা হয়েছে গ্রাফিন ফিল্ম কুলিং সিস্টেম।
ক্যামেরা: নতুন দুই স্মার্টফোন ছবি তোলায় নতুন ও বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা দেবে বলে দাবি করছে হুয়াওয়ে। পি৩০ প্রোতে রয়েছে চারটি ক্যামেরা। হুয়াওয়ের সুপার স্পেকট্রাম সেন্সরবিশিষ্ট ৪০ মেগাপিক্সেলের প্রাইমারি ক্যামেরাটির লেন্স প্রোপারটি এফ/১.৬ (২৭ মিলিমিটার)। ২০ মেগাপিক্সেলের আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল সেকেন্ডারি ক্যামেরার লেন্স প্রোপারটি এফ/২.২ (২২ মিলিমিটার)। আর ৮ মেগাপিক্সেলের টেলিফটো ক্যামেরার লেন্স প্রোপারটি এফ/৩.৪ (১২৫ মিলিমিটার), সঙ্গে রয়েছে নতুন টিওএফ প্রযুক্তি। এ ক্যামেরা ৫ এক্স অপটিক্যাল জুম থেকে ১০ এক্স হাইব্রিড এবং ৫০ এক্স পর্যন্ত ডিজিটাল জুম করা যাবে।
তবে পি৩০-তে এফ/১.৮ (২৭ মিলিমিটার) লেন্সবিশিষ্ট ৪০ মেগাপিক্সেলের আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা থাকলেও টিওএফ প্রযুক্তি নেই। এর সেকেন্ডারি ক্যামেরাটি ১৬ মেগাপিক্সেলের।
দুই ফোনেই থাকছে সুপার স্পেকট্রাম সেন্সর। ফলে পি৩০ ও পি৩০ প্রোতে ক্যামেরার আইএসও রেট সর্বোচ্চ যথাক্রমে ২ লাখ ৪ হাজার ৮০০ ও ৪ লাখ ৯ হাজার ৬০০।
সেলফির জন্য দুটি ফোনেই রয়েছে ২৩ মেগাপিক্সেলের এফ/২.০ লেন্সবিশিষ্ট ক্যামেরা। নিখুঁত সেলফি তুলতে রয়েছে এআইবিশিষ্ট এইচডিআর প্লাস প্রযুক্তি।
ডুয়াল ভিউ ভিডিও মোডের কারণে একসঙ্গে ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ও ক্লোজ আপ ভিউ ভিডিও করা যাবে।