বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ভারতীয় আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি। ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের পূর্ণ কার্যক্রম শুরু উপলক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের মধ্যকার শক্তি ও অর্থনীতিভিত্তিক সম্পর্ক জোরদার করতে এটি একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এটিই ভারতের একমাত্র প্রকল্প, যাতে উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই অন্য দেশে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই আনন্দ ভাগ করে নিতে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রধামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
সাক্ষাতের পর টুইটারে গৌতম আদানি বলেন, “১৬০০ মেগাওয়াট আলট্রা সুপার-ক্রিটিক্যাল গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে শুরু ও হস্তান্তরের বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা বলতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। করোনা মহামারির মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশ থেকে যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে মাত্র সাড়ে তিন বছরে বিদ্যুৎ কমিশন শুরু হয়েছে তাদেরকে অভিবাদন।’’
গত ৬ এপ্রিল গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু হয়। এরপর ২৬ জুন তারিখে দ্বিতীয় ইউনিটও সক্রিয় করা হয়। এই দুটো ইউনিটই ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পিপিএ (বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি) এর আওতাধীন গোড্ডা ইউএসসিটিপিপি তথা আলট্রা সুপার-ক্রিটিক্যাল পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে আদানির সাবসিডিয়ারি কোম্পানি– আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড লিমিটেডের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ১,৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগান দেয়ার কথা। ২০১৭ সালে স্থাপিত, ২৫ বছরমেয়াদী একটি ৪০০ কিলোভোল্টের ট্রান্সমিশন সিস্টেমের মাধ্যমে বাংলাদেশ গ্রিডের সাথে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সংযুক্ত থাকবে।
দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনা মহামারির প্রভাবের ফলে এই প্রকল্পে অনেক বাধা-বিপত্তি এসেছে। এত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আদানি গ্রুপের প্রকৌশলী দল থেমে না থেকে পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে এবং ফলাফল হিসেবে বর্তমানে গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সক্রিয় অবস্থাই এর প্রমাণ। এ প্রকল্পের মাধ্যমে আদানি বিশ্বমানের প্রজেক্ট ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাড়তি সরবরাহের ফলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া হবে। ব্যয়বহুল তরল জ্বালানির প্রয়োজন কমবে। এর ফলে বিদ্যুতের মূল্য কমবে এবং বিদ্যুৎ বিষয়ক ভোগান্তি থেকে জনগণও অনেকটা রেহাই পাবে। এই কেন্দ্রটিতে শতভাগ ফ্লু গ্যাস ডিসালফারাইজেশন (এফজিডি), বাছাইকৃত ক্যাটালিক্টিক রিকনভার্টার (এসসিআর) এবং জিরো ওয়াটার ডিসচার্জ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়, যাতে করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা মোতাবেক পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়।
গোড্ডা ইউএসসিটিপিপি এর যাত্রা শুরু হওয়ার বিষয়টি একইসাথে আদানি গ্রুপ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জন্য অন্যতম মাইলফলক। অন্যদিকে নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের শিল্পখাতেও সমৃদ্ধি বাড়বে, দেশের অর্থনীতি আরো শক্তিশালী হবে।