গ্রহাণু এক ধরনের পাথর দিয়ে গঠিত বস্তু যা তার তারাকে কেন্দ্র করে আবর্তন করে। সৌরজগতে গ্রহাণুগুলো ক্ষুদ্র গ্রহ নামক শ্রেণীর সবচেয়ে পরিচিত। এরা ছোট আকারের গ্রহ যেমন বুধের চেয়েও ছোট। বেশিরভাগ গ্রহাণুই মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত গ্রহাণু বেল্টে থেকে নির্দিষ্ট উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে আবর্তন করে। এসব গ্রহাণু এক সময় প্রবল গতিতে পৃথিবীর অস্তিত্ব মুছে দিবে বলে জানিয়েছে বিজ্ঞানীরা।
মহাকাশ বেয়ে চলতি মাসে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসবে গ্রহাণু। তা-ও আবার একটা নয়, তিনটা। ১৫ নভেম্বর মহাজাগতিক বিস্ময়ের সাক্ষী থাকবে পৃথিবী।
সম্প্রতি যে তথ্য নিয়ে এসেছে ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ওরফে নাসা। সেন্টার ফর নিয়ার আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজও এই কথায় সিলমোহর বসিয়ে দিয়ে তার সত্যতা প্রতিপন্ন করেছে!
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে যে ১৪ নভেম্বর একজোড়া গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসবে। নিজস্ব হিসাবের পরিপ্রেক্ষিতে নাসা এই দুই গ্রহাণুর নাম রেখেছে ২০২০ টিবি৯ এবং ২০২০ এসটি১। তথ্য বিশদে তুলে ধরেছে এই দুই গ্রহাণুর আয়তনের দিকটাও। জানা গিয়েছে যে ২০২০ টিবি৯ আয়তনে ৩০ মিটারের কাছাকাছি। অর্থাৎ আয়তনের দিক থেকে এ এক বিমানের সমান। এর গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ২৩ হাজার ৬০০ কিলোমিটার বলে জানিয়েছে নাসা। এটাও জানাতে ভোলেনি যে পৃথিবীর পাশ দিয়ে ৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরত্ব রেখে এটি বেরিয়ে যাবে।
অপরদিকে, ২০২০ এসটি১ গ্রহাণুর আয়তন তুলনামূলকভাবে বড়, প্রায় ১৭৫ মিটার। কুতুব মিনার দৈর্ঘ্যে ৭৩ মিটার, অতএব এটি আয়তনে তার দুই গুণেরও বেশি। এর গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ৩০ হাজার কিলোমিটার। পৃথিবীর পাশ দিয়ে ৭.৩ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরত্ব রেখে এটি বেরিয়ে যাবে। এ ছাড়া নভেম্বরের ১৫ তারিখে ২০১৯ ভিএল৫ নামে আরও একটি গ্রহাণু বেরিয়ে যাবে পৃথিবীর পাশ ঘেঁষে। জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন যে পৃথিবী এবং চাঁদের মাঝে যে দূরত্বগত ব্যবধান, তার নয় গুণ বেশি দূরত্বে পৃথিবী ঘেঁষে এই গ্রহাণু বেরিয়ে যাবে।
বিজ্ঞানীরা এই প্রসঙ্গে বিশেষ করে আরও দুই তথ্য পরিবেশ করতে ভুলছেন না। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে আতসবাজি থেকে যেমন আগুনের ফুলকি ঝরে পড়ে, সে সব কিছু এ ক্ষেত্রে দেখা যাবে না। তেমনই খালি চোখেও দেখা যাবে না এই গ্রহাণুদের, কেবল শক্তিশালী টেলিস্কোপেই তা ধরা পড়বে!