২০১৯ সালে প্রথম যখন ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বাজারজাত করা হয়, সে সময় থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বার্ষিক বিক্রির হার ১২২ শতাংশ থাকবে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছিলেন প্রযুক্তিবিদরা। ক্যানালিসের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে স্যামসাং ৮৯ লাখ ফোল্ডেবল স্মার্টফোন বাজারজাত করেছে। বিশ্বজুড়ে ২০২৪ সাল নাগাদ ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের বার্ষিক বিক্রি ৫৩ শতাংশ হারে বেড়ে তিন কোটি ইউনিট ছাড়িয়ে যাবে।
গবেষণা সংস্থাটি জানায়, উচ্চমূল্য থাকলেও ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের বাজার ১৪৮ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে পুরো স্মার্টফোন বাজার মাত্র ৭ শতাংশ বেড়েছে।
ক্যানালিসের রিসার্চ অ্যানালিস্ট রুনার বোরহোভডে বলেন, কভিড-১৯ মহামারীর সময় বড় স্ক্রিনের ডিভাইস ব্যবহারের হার বেড়ে যাওয়ায় ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের বিক্রি বেড়েছে। মহামারী-পরবর্তী সময়ে সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। ফলে উৎপাদনকারীরা গ্রাহকদের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে ফোল্ডেবল স্মার্টফোনসহ বিভিন্ন ডিভাইস উৎপাদন ও সরবরাহের সুযোগ পাবে।
প্রতিষ্ঠানটির আরেক গবেষক টবি ঝু বলেন, ২০১৯ সাল বা নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ পূর্ববর্তী অবস্থার তুলনায় ৮০০ ডলারের প্রিমিয়াম অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের বাজার ১৮ শতাংশ হ্রাস পাওয়ায় উৎপাদনকারীরা চাপের মুখে ছিল। যেখানে একই সময়ে আইওএস ডিভাইসের বিক্রি ৬৮ শতাংশ বেড়েছে।
ঝু জানান, স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে গুগলসহ অন্যান্য বড় অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস উৎপাদনকারীদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, ফিচার ও হার্ডওয়্যারের ব্যবহার নিশ্চিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
ক্যানালিসের অন্য একজন রিসার্চ অ্যানালিস্ট অ্যাম্বার লিউ বলেন, বিগত বছরগুলোয় ফোল্ডেবল ডিভাইসের সরবরাহ চেইনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এজন্য স্যামসাংকে ধন্যবাদ। সামনের দিনগুলোয় একাধিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফোল্ডেবল স্মার্টফোন ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা করবে, যা তাদের বাণিজ্যিক প্রচার কৌশল ও পরিকল্পনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
শিগগিরই বাজারে আরো কিছু ফোল্ডেবল স্মার্টফোন উন্মুক্তের বিষয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে ক্যানালিস। কেননা বেশকিছু প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে তাদের ডিভাইসের ওজন, দাম ও পুরুত্ব কমিয়েছে। বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো ভালো প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্মার্টফোনের বিক্রি বাড়ার পাশাপাশি সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ বিক্রিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভালো আয় করতে সক্ষম হয়েছে। কেননা স্মার্টফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাজার দখলে নিতে চিপ ক্রয় বাড়িয়েছে। বৈশ্বিক চিপস্বল্পতার মধ্যেও রেকর্ড আয় করেছে সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন (এসএমআইসি)। বার্ষিক আয়ের প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ২০২১ বর্ষে তাদের আয় ৩৯ শতাংশ বেড়ে ৫৪০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। রেফিনিটিভ ডাটার বরাতে জানা গেছে, ২০১০-এর পর এটি সর্বোচ্চ বার্ষিক আয়।