চীনা ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিশেষত তরুণরা এ অ্যাপে ছোট ছোট মজার ভিডিও শেয়ার করে। দেশে দেশে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। তবে তুমুল জনপ্রিয় এ অ্যাপের সমালোচনাও কম নয়। এবার মার্কিন আইনপ্রণেতারাও টিকটকের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন। তাদের দাবি, এ অ্যাপ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এমনকি আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে টিকটক মার্কিন ভোটারদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে টিকটকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় তদন্তের জন্য নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। খবর সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমস।
এক বিবৃতিতে মার্কিন সিনেটর চাক শুমার ও টম কটন দাবি করেছেন, টিকটকসহ চীনা অ্যাপগুলো যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী কিছু প্রচার কিংবা প্রকাশ করছে কিনা, এ বিষয়ে বিশদ তদন্ত করা জরুরি। এসব অ্যাপ মার্কিন নাগরিকদের টার্গেট করে গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে। এমনকি ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেমন বিভিন্ন রুশ প্রতিষ্ঠানের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে, তেমনি আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও চীনা এসব অ্যাপের ভোটারদের ওপর প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বিবেচনায় নিয়ে টিকটকসহ চীনা অ্যাপগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে মার্কিন নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হলো।
চলতি মাসের শুরুতে রিপাবলিকান দলের সিনেটর মার্কো রুবিও মার্কিন সিনেটের ফরেন ইনভেস্টমেন্ট কমিটির কাছে টিকটকসহ চীনা অ্যাপগুলোর যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করা ও বিদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পণ্য আনার বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
বেইজিংভিত্তিক স্টার্টআপ বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন একটি অ্যাপ টিকটক। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে চালুর পর অল্প সময়ের মধ্যে অ্যাপটি বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। চীন ছাড়িয়ে পশ্চিমা বিশ্বে জনপ্রিয়তা রয়েছে টিকটকের। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিশ্বব্যাপী ১৭ কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারী টিকটক ডাউনলোড দিয়েছে। ফেসবুকের পর এটা বর্তমান বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ডাউনলোড হওয়া অ্যাপ। একই সময় টিকটকের রাজস্ব দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্রেই টিকটকের ১০ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে।
তুমুল জনপ্রিয়তার কারণে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে টিকটক নিয়ে সমালোচনা কিংবা ভোটারদের ওপর প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠতে পারে বলে আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল। এ পরিস্থিতিতে টিকটক কর্তৃপক্ষ আগেই জানিয়ে দিয়েছে অর্থের বিনিময়ে তারা কোনো রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন প্রচার করবে না। তবে কোনো প্রার্থী কিংবা রাজনৈতিক দল চাইলে তাদের নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থেকে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ভিডিওবার্তা শেয়ার করতে পারবেন। মূলত আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেকোনো ধরনের বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রাখার জন্য টিকটক কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।