গত বছর চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) মাইক্রোব্লগিং প্লাটফর্ম টুইটারের রাজস্বে উল্লম্ফন দেখা গেছে। গত বছরকে অসাধারণ আর্থিক সাফল্যের বছর উল্লেখ করেছেন টুইটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জ্যাক ডরসি। খবর বিবিসি।
টুইটারের আর্থিক খতিয়ান অনুযায়ী, গত বছর অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব ১২৯ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০১৯ সালের একই প্রান্তিকের চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি।
গত জানুয়ারিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্লাটফর্মে নিষিদ্ধ করেছিল টুইটার। ওই সময় বিশ্লেষকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, চলতি প্রান্তিকের আর্থিক খতিয়ানে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিষিদ্ধের ঘটনা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে ‘সহিংসতা উসকে দেয়ার’ আশঙ্কায় বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে টুইটার। ওই টুইটারের নিজস্ব ব্লগে এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছিল।
জো বাইডেনের জয়ের অনুমোদন দেয়া নিয়ে কংগ্রেসের বৈঠককে ঘিরে ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় ট্রাম্পকে দায়ী করা হয়। অভিযোগ উঠেছে ট্রাম্পের ক্রমাগত উসকানির ফলেই যুক্তরাষ্ট্রের ২০০ বছরের ইতিহাসে এমন নিন্দনীয় ঘটনা ঘটেছে।
ওই সময় টুইটার জানায়, @realDonaldTrump অ্যাকাউন্টটি থেকে করা টুইটগুলো ‘গভীরভাবে পর্যালোচনা’ করার পরই অ্যাকাউন্টটি স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর আগে ক্যাপিটল হিলে হামলার ওই ঘটনার পর পরই তাত্ক্ষণিক ট্রাম্পের আইডি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করে ফেসবুক ও টুইটার। ইউটিউব কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের ভিডিও সরিয়ে নেয়। শুধু ট্রাম্পই নয়, তার অনেক সমর্থকেরও অ্যাকাউন্টে একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
এ বিষয়ে জ্যাক ডরসি বলেন, টুইটার এমন একটি প্লাটফর্ম, যা কোনো একক টপিক কিংবা একক অ্যাকাউন্টের চেয়ে অনেক বড় কিছু। এর প্রমাণ মিলেছে গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের আর্থিক খতিয়ানে। টুইটার অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে রাজস্ব আয়ে বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসকে অতিক্রম করেছে। তবে গত প্রান্তিকে গ্রাহক প্রবৃদ্ধিতে লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে দাঙ্গার পর গত ৮ জানুয়ারি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টে স্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার সিদ্ধান্ত জানায় টুইটার। এরপর থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে চলতি প্রান্তিকেও টুইটারের গ্রাহক প্রবৃদ্ধি স্থবির থাকবে।
জ্যাক ডরসি বলেন, টুইটারে ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়াও আরো ছয় সহস্রাধিক অনুসরণ করার মতো নানা টপিক আছে। আমরা আশা করছি, এ বিপুলসংখ্যক টপিক টুইটারের গ্রাহক বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। এছাড়া টুইটারের অডিয়েন্সের ৮০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের। আমরা বিশ্বজুড়ে সেবা দিচ্ছি। কাজেই আমাদের প্রবৃদ্ধি শুধু সংবাদ এবং রাজনৈতিক ইস্যু বা রাজনৈতিক কোনো ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়।
আর্থিক খতিয়ানে টুইটার জানায়, গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তাদের প্লাটফর্মের প্রাত্যহিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১৯ কোটি ২০ লাখ, যা চতুর্থ প্রান্তিকে ৫০ লাখ বেড়েছে। অবশ্য গত বছর চতুর্থ প্রান্তিকে প্রাত্যহিক সক্রিয় টুইটার ব্যবহারকারীর সংখ্যা এক বছর আগের একই প্রান্তিকের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেড়েছে।
বিবৃতিতে টুইটার জানায়, চলতি বছর পরিচালন ব্যয় কমপক্ষে ২৫ শতাংশ বাড়বে। এছাড়া চলতি বছর কর্মী সংখ্যা ২০ শতাংশ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। গত বছর শেষে টুইটার কর্মীবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৫০০ জন।