সরকার কোনো গণমাধ্যম বন্ধের পক্ষে নয়, তবে আওয়ামী লীগ আমলে নিবন্ধন পাওয়া সংবাদ মাধ্যমের বিষয়ে তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। সোমবার বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে তথ্য ভবনে এক আলোচনায় তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ কায়েমের অস্ত্র হিসেবে শেখ হাসিনা গণমাধ্যমকে ব্যবহার করেছেন। এ সময় রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে করা মামলা পর্যালোচনার আশ্বাস দেন তিনি।
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের আয়োজনে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের আলোচনায় যোগ দেন আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়নের শিকার সাংবাদিক ও তাদের স্বজনরা। তারা বলেন, গণহত্যায় জড়িত অনেক পুলিশ গ্রেপ্তার হয়নি এখনো।
এতে জানানো হয়, ১৫ বছরে ৬১ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। সর্বোচ্চ ৮ জন নিহত হন ২০২৪ সালে। দেড় দশকে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ৪৪ ধাপ পিছিয়েছে দেশ। তবে এ বছর এগিয়েছে ১৬ ধাপ।
গণমাধ্যমের দুর্দশার জন্য সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকার-ই দায়ী বলে মনে করছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা।
দৈনিক যায়যায়দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান বলেন, ‘রাজনৈতিক মামলাগুলো এক কলমের খোঁচায় আপনারা প্রত্যাহার করুন। আমি বারবার অনুরোধ করছি। আমি নিজেও কিন্তু এখনও আসামি।’
দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ এবং স্বাধীন গণমাধ্যম একসাথে চলতে পারে না। একই ব্যক্তি বা দল বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ দশকের পর দশক যেন ক্ষমতায় না থাকে।’
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ জানান, আর্থিকভাবে স্বনির্ভর নাহলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আরও বিপন্ন হবে।
কমিশন প্রধান বলেন, ‘তারা (সাংবাদিক) যদি অন্যের করুণার ওপরে, অন্যের পৃষ্ঠপোষকতার ওপরে নির্ভরশীল থাকেন তাহলে যাদের করুণার ওপর নির্ভরশীল থাকবেন, যাদের পৃষ্ঠপোষকতায় নির্ভরশীল থাকবেন তাদের কাছে স্বাধীনতা ছাড় দিতে হবে।’
তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সম্প্রতি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ২৬৬ মামলার মধ্যে ৭৪টি হয়রানির এবং ২৯টি বক্তিগত কারণে করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ৪টি মামলায় আসামি করা হয়েছে কয়েকজনকে।
তথ্য উপদেষ্টা জানান, হয়রানিমূলক মামলা পর্যালোচনা হবে। সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতির নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশ্নের মাধ্যমে আরও দায়িত্বশীল হবে সরকার।
মাহফুজ আলম বলেন, ‘পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে প্রশ্ন করা এক জিনিস আর মেলাইন করা অথবা সাংবাদিকতাটাকে একটা দলের আদর্শের প্রপাগান্ডা হিসেবে ব্যবহার করা আলাদা জিনিস।
উপদেষ্টা জানান, কয়েকটি পত্রিকা জুলাই অভ্যুত্থানকে আন্দোলন লেখে, যা কাম্য নয়। সরকার কোনো সংবাদ মাধ্যমকে মব সন্ত্রাসের শিকার হতে দেয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।