সাবধান! অ্যান্ড্রয়েড ইউজারদের স্মার্টফোন টার্গেট করছে নতুন এক র্যানসমওয়্যার। হানা দেওয়ার আগেই অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সতর্ক করছে মাইক্রোসফ্ট। সম্প্রতি একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে, ভয়ানক এই র্যানসমওয়্যার-এর নাম MalLocker.B। এটি মূলত বিভিন্ন অনলাইন ফোরাম এবং ওয়েবসাইট থেকে ইউজারদের স্মার্টফোনে ‘বিনবুলায়ে মেহমান’-এর মতো ঢুকে পড়ে।
এই MalLocker.B নামক র্যানসমওয়্যার আদতে বিভিন্ন ম্যালিশিয়াস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস-এর ভিতরে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে। তাই সবথেকে বেশি পরিমাণে আপনার সতর্ক থাকা উচিত, কোনও অ্যাপস ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে।
একবার এই MalLocker.B আপনার স্মার্টফোনে ঢুকে পড়লে কী ঘটতে পারে?
বড় বিপদ হয়ে যেতে পারে। MalLocker.B অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে একবার ঢুকে পড়লে, আপনার নিজের ফোন স্ক্রিনের অ্যাকসেসটাই সে নিয়ে নেবে। MalLocker.B কোনও ভাবেই ডিভাইসকে এনক্রিপ্ট করে না। তার বদলে এটি ফোন স্ক্রিন ফ্রিজ করে দিয়ে ভয়ংকর দাবি নিয়ে একটি মেসেজ ফোন স্ক্রিনে ডিসপ্লে করে। সেই মেসেজে লেখা হয়, ‘ল এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি থেকে মেসেজ পাঠানো হচ্ছে, স্ক্রিন আনলক করার জন্য ফাইন দিতে হবে।’
এছাড়াও MalLocker.B কল নোটিফিকেশনের সুবিধাও নেয়। একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ইউজারদের কাছে যখন কোনও ফোনকল আসে, ঠিক তখনই এই র্যানসমওয়্যার অ্যাক্টিভেট হয়ে যায়। আর ইউজারেরা যখন হোম বাটন বা রিসেন্ট অ্যাপ বাটনে ক্লিক করেন, সঙ্গে-সঙ্গেই স্ক্রিনটি লকড হয়ে যায়। ঠিক তখনই আপনার নজরে আসে সেই ফাইনের বিষয়ে ল এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির ভুয়ো মেসেজটি।
ভয়ংকর এই র্যানসমওয়্যার হানার বিষয়ে মাইক্রোসফ্টের তরফে ব্যখ্যা করে বলা হচ্ছে যে, MalLocker.B কখনওই কোনও কিছু এনক্রিপ্ট করে ফাইলসের অ্যাকসেস ব্লক করে না। এটা শুধুমাত্রই ফোন স্ক্রিনের অ্যাকসেসটি নিয়ে নেয়। যার ফলে ইউজার কোনও কাজই করতে পারবেন না। নিজের স্মার্টফোনটি খুলেও দেখতে পারবেন না। আর এই র্যানসমওয়্যার নিয়ে যাঁরা কাজ চালাচ্ছেন, অর্থাৎ সেই র্যানসমওয়্যার নোট ইউজার কিন্তু আপনার ফোনের সবকিছুই অ্যাকসেস করে যাচ্ছে এবং তারাই ফাইনও দিতে বলছে!
রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে যে, এই ম্যালওয়্যারের কোড খুবই সাধারণ। তাই খুব সহজেই এটি একটি ফোন থেকে অন্য আরও ফোনে জাস্ট কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কী করে এড়িয়ে চলবেন?
এই র্যানসমওয়্যার-এর হানা থেকে বাঁচার সবথেকে সহজ উপায় হচ্ছে, যতটা পরিমাণে সম্ভব অজানা কোনও সোর্স বা ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপ ডাইনলোড না করা। যদি আপনার একান্তই কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করার প্রয়োজন বোধ হয়, তাহলে অতি অবশ্যই তা Play Store বা ভেরিফায়েড কোনও সোর্স থেকে ডাউনলোড করুন।
তবে ইউজারদের কোনও ব্যক্তিগত তথ্য এই র্যানসমওয়্যার চুরি করে কাজে লাগাচ্ছে কী না, সেই বিষয়ে এখনও অবধি কোনও তথ্যপ্রমাণ মেলেনি। মাইক্রোসফ্ট বলছে, ‘এই মোবাইল র্যানসমওয়্যার ভ্যারিয়ান্টের অনুসন্ধান করা খুবই জরুরি কারণ এটির স্বভাব এমনই যা আগে কখনও দেখা যায়নি। পরবর্তীতে ম্যালওয়্যারদের জন্যও এটি নতুন রাস্তা খুলে দিতে পারে ইউজারদের স্মার্টফোনে অ্যাটাক করার জন্য।’