ল্যাপটপ কিনতে গিয়ে অনেকেই কিছু কনফিগারেশন কিংবা ডিভাইসের দিকে নজর দিয়ে বাড়তি খরচ করে ফেলেন। অথচ সেসব বিষয় আপনার ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটারের জন্য অতটা জরুরি নয়। বিষয়গুলো এড়িয়ে গেলে তুলনামূলক অনেক কম টাকায় আপনি ভালো ল্যাপটপ কিনতে পারেন।
পপুলার সায়েন্স ওয়েবসাইটে এমনই কিছু বিষয়ের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো একজন সাধারণ ল্যাপটপ ক্রেতা অনায়াসে এড়িয়ে গিয়ে অপব্যয় থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
১. ৪কে ডিসপ্লে:
যারা সাধারণ প্রাতিষ্ঠানিক কাজের জন্য কিংবা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ল্যাপটপ কেনার পরিকল্পনা করছেন, তারা অযথা এই ডিসপ্লে কিনতে যাবেন না। এতে বেশি খরচ পড়ে যাবে।
যারা গেম খেলেন কিংবা ফটোশপের কাজ করেন, তারাও চোখ বন্ধ করে এড়িয়ে যেতে পারেন। অন্য ডিসপ্লেতেও এসব কাজ আরামে করা যায়। যদি আপনার বাজেট ভালো থাকে, তবে সেটি ভিন্ন কথা। আর যদি বাজেট কমাতে চান, তাহলে ১০৮০পি অথবা ১৪৪০পি কিনতে পারেন। এখানে রিফ্রেশ রেটের দিকে খেয়াল রাখবেন। সেটি যেন ১২০ অথবা ১৪৪ হার্জের হয়।
৪কে ডিসপ্লে মূলত টিভির জন্য কেনা হয়। একটু দূর থেকে দেখতে ভালো। আপনাকে বুঝতে হবে ল্যাপটপ আর টিভি দুটো ভিন্ন বিষয়।
২. র্যাম:
এটিকে বলা হয় কম্পিউটারের অস্থায়ী মেমরি। অধিকাংশ ক্রেতারা ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার কেনার সময় র্যামের দিকে নজর দেন। এটি আসলে বোকামি।
আপনি কী কাজে ল্যাপটপ ব্যবহার করতে চান, সেটির উপর নির্ভর করে র্যাম কেনা উচিত। অযথা ৩২ জিবি র্যাম কিনে টাকা খরচ করবেন না।
সাধারণ একজন ব্যবহারকারী চার জিবি র্যাম দিয়েও অনায়াসে কাজ চালিয়ে দিতে পারেন। সেটি বাড়িয়ে আপনি আট জিবিও করতে পারেন। ১৬ জিবি অধিকাংশের জন্য অতিরিক্ত বলে বিবেচনা করা হয়।
যদি আপনি ভিডিও এডিটিংয়ের কাজকর্ম করেন, তাহলে ৩২ জিবিতে যেতে পারে। অন্যথায় দরকার নেই। আরেকটি ব্যাপার মাথায় রাখতে পারেন। এমন ল্যাপটপ কিনবেন যেটি পরে আপগ্রেড করা যায়। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে র্যাম বাড়িয়ে নেবেন।
৩. সিপিইউ:
সেন্ট্রাল প্রোসেসিং ইউনিট বা সিপিইউ নিয়েও অনেকের দুর্বলতা আছে। সেটি থাকা ভালো। কারণ এটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু বেশি গুরুত্ব দিয়ে বাড়তি খরচ করার মানে নেই।
বর্তমানে কয়েকটি উন্নত প্রজন্মের প্রসেসর বাজারে আছে।
আপনি যদি ‘Core i9-9900’ পছন্দ করেন, প্রযুক্তির ভাষায় তার মানে হল এটি নবম প্রজন্মের।
এখন আপনি যদি AMD প্রসেসর কেনেন, তবে ওই নম্বরের সঙ্গে মেলাতে পারবেন না। সেটিকে নবম প্রজন্মের বলা হবে না। তার মানে কিন্তু এই না ইনটেলের থেকে AMD খারাপ। তাই আপনি যদি কম বাজেটের মধ্যে একটা ভালো মানের প্রসেসরের কম্পিউটার বা ল্যাপটপ কিনতে চান তাহলে AMD প্রসেসর নিয়ে নিন।
কারণ কম বাজেটের মধ্যে AMD’র যে পাওয়ারফুল প্রসেসর পাবেন, সেটা ইনটেলের কম দামের প্রসেসরের মধ্যে পাবেন না।
৪. এইচডিডি সাইজ এবং স্পিড:
স্টোরেজের কথা আসলেই হার্ড ড্রাইভের কথা সামনে আসে। মেগাবাইট এবং টেরাবাইট এককে ড্রাইভের দুটি মূল ধারা বিদ্যমান। এর একটি কিছুটা পুরনো হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ বা এইচডিডি এবং অপরটি অপেক্ষাকৃত নতুন সলিড স্টেট ড্রাইভ বা এসডিডি। গঠন ও কার্যকরী দিক থেকে দুই ড্রাইভের যেমন পার্থক্য রয়েছে তেমনি পারফরম্যান্সেও দুই ধারার মধ্যে বিস্তর ফারাক।
কম্পিউটার দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে হার্ড ডিস্ক সাইজ এবং স্পিড খুব একটা প্রভাবের ব্যাপার নয়।
এই ইন্টারনেটের যুগে ছবি, সিনেমা, গান কিংবা ফাইল সংরক্ষিত রাখা কোনো ব্যাপার নয়। আপনার ডকুমেন্ট বেশি হলে আপনি ক্লাউড স্টোরেজ ব্যবহার করতে পারেন। তাই এ বিষয়ে বাড়তি খরচ না করলেও পারেন।