মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলা ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমালোচনা করেছেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই প্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব বিতর্কিত এই আইন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন।
গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সত্য নাদেলা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘বাজফিড’ এর প্রধান সম্পাদক বেন স্মিথকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।
ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তিনি বলেন, ‘যা হচ্ছে সেটা দুঃখজনক এবং খারাপ, এমনটাই আমি মনে করি। আমার চাওয়া ভবিষ্যতে কোনো বাংলাদেশি শরণার্থী ভারতে গিয়ে বিখ্যাত কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন অথবা ইনফোসিসের পরবর্তী সিইও হবেন। এটাই আকাঙ্ক্ষা হওয়া উচিত। আয়নার দিকে তাকিয়ে যদি দেখতে পাই যুক্তরাষ্ট্রে আমার সঙ্গে এটাই হয়েছিল, তাহলে আমার প্রত্যাশা এমনটা ভারতেও ঘটবে।’
সত্য নাদেলার এই মন্তব্য বাজফিডের প্রধান সম্পাদক বেন স্মিথ নিজেই টুইটারে পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
এরপরে সত্য নাদেলা মাইক্রোসফট ইন্ডিয়ার অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টেও এ নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রতিটি দেশ নিজেদের সীমানা সংজ্ঞায়িত করে জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত করবে এবং সেই অনুযায়ী অভিবাসন নীতিও নির্ধারণ করবে। এটি গণতান্ত্রিক কাঠামোতে এমন একটি বিষয় যেখানে সরকার ও জনগণ সে সীমানার মধ্যে থেকে তর্ক-বিতর্ক করবে এবং এর সংজ্ঞা খুঁজে বের করবে।
তিনি আরও বলেন, তিনি ভারতীয় ঐতিহ্য ও বহুত্ববাদী সংস্কৃতিতে বড় হয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে একজন অভিবাসী হিসেবে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তিনি এমন এক ভারতবর্ষের প্রত্যাশা করেন যেখানে একজন অভিবাসী একটি সমৃদ্ধ সূচনার সন্ধান করতে পারে অথবা বহুজাতিক কোনো কোম্পানির নেতৃত্ব দিতে পারে। এতে ভারতীয় সমাজের সঙ্গে সঙ্গে তার অর্থনীতিও ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।
মোদী সরকারের নাগরিকত্ব আইনের তীব্র বিরোধী ভারতীয় ইতিহাস বিশারদ রামচন্দ্র গুহ সত্য নাদেলার এমন অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন – মোবাইলেই মিলবে নারী ও শিশু নির্যাতনের জরুরি সহায়তা
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে নিপীড়িত হয়ে পালিয়ে আসা অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দিতে ভারত আইন সংশোধন করেছে। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের পরেই আইনে পরিণত হয় বিলটি। অবশ্য এটি শুরু থেকেই মুসলিমবিরোধী আখ্যা পেয়েছে।
এই আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দেশজুড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সরব। লাখ লাখ মানুষ দফায় দফায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। বিক্ষোভকেন্দ্রিক এই সহিংসতায় অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন।