প্রধানমন্ত্রী‘র তথ্য ও যোগাযোগপ্রযু্িক্ত উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ কর্তৃক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হযেছে তিন দিনব্যাপী ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ২০২০।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ দেশে এই প্রথমবারের মতো ডিজিটাল প্রযুক্তি নিয়ে এ ধরনের মেলার আয়োজন করে। মেলা উদ্বোধনের পর থেকেই বিভিন্ন বয়সী উৎসুক জনতা বিশেষ করে তরুণ তরুণীদের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মত।
মেলা দর্শনার্থীগণ অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে বিনা ফিতে প্রবেশ করতে পারবেন। মেলা প্রাঙ্গঁনেও দর্শনার্থীদের জন্য রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দর্শনার্থীগণ যঃঃঢ়ং//িি.িফরমরঃধষনধহমষধফবংযসবষধ.ড়ৎম.নফ/ ওয়েব লিংকে রেজিস্ট্রি করতে পারবেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উদ্যোগে ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতের সরকারি – বেসরকারি অংশীজনদের নিয়ে এই মেলার আয়োজন করা হয়। ১৮ জানুয়ারি তিন দিনব্যাপী এই মেলা শেষ হবে।
প্রযুক্তির মহাসড়ক বিনির্মাণের অগ্রগতি, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা এবং পরিবর্তিত বিশ্বে নতুন সভ্যতার রূপান্তরে আইওটি, রোবটিক্স, বিগডাটা, ব্লকচেইন প্রযুক্তির মহাসড়ক ফাইভ জি‘র বিস্ময়কর প্রভাব প্রদর্শন এবারের ডিজিটাল বাংলাদেম মেলার মূল আকর্ষণ। মেলায় প্রযুক্তির বিস্ময়কর সংস্করণ ফাইভ জি প্রদর্শণ করা হচ্ছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন, উপযোগী মানব সম্পদ সৃষ্টি, ডিজিটাল প্রযুক্তির আধুনিক সংস্করণের সাথে জনগণের সেতুবন্ধন তৈরি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন অগ্রগতি তুলে ধরাই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা’র অন্যতম মূল লক্ষ্য।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এ বিষয়ে গতকাল বৃহ্স্পতিবার ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা উপলক্ষে ডাক বিভাগীয় উদ্যোক্তা সম্মেলনে মেলার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, জ্ঞান ভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠায় ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে দেশের মেধাবী বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠীর সেতুবন্ধন স্থাপনের জন্য কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণ অপরিহার্য। ডিজিটাল সংযুক্তি হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনিমার্ণের অন্যতম ভিত্তি। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং জনগণের জন্য টেলিযোগাযোগ সেবাকে সহজলভ্য করার মাধ্যমে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সজীব আহমেদ ওয়াজেদ এর দিকনির্দেশনায় সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথকে প্রশস্ত করেছে। আমাদের লক্ষ্য ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলাদেশকে নেতৃত্বের জায়গায় প্রতিষ্ঠা করা। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন আরো বেগবান করার জন্য দেশের মেধাবী তরুণ সমাজকে তিনি উপযোগী করে
তৈরি এবং এই বিষয়ে তাদের চেতনা জাগ্রত করতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এ মেলায় আইএসপিসহ ৮২টি প্রতিষ্ঠান, প্যারেন্টাল কন্ট্রোল, ট্রিপল প্লে (এক ক্যাবলে ল্যান্ডফোনের লাইন, ইন্টারনেট ও ডিশ সংযোগ), মোবাইল অ্যাপস, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা ও ডিজিটাল প্রযুক্তি ইত্যাদি প্রদর্শন করবে। ওয়ালটন, স্যামসাং, সিম্ফনির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করছে। এছাড়াও দেশি সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো তাদের তৈরি সফটওয়্যার ও সেবা উপস্থাপন করছে। টেলিকম অপারেটরগুলো তাদের ভয়েস, ইন্টারনেট ও মূল্য সংযোজিত সেবা (ভ্যাস) দেখাবে। এছাড়া জেডটিই, হুয়াওয়ে, নকিয়া, এরিকসন ফাইভ-জি প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে। দেখাবে লাইভ ব্যবহারের উপযোগিতা। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট টেলিমেডিসিন ও এটিএম সেবা দেখাবে। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ভিশন মেলার মাধ্যমে টেলিমেডিসিন প্রদর্শীত হচ্ছে। মেলায় লাইভ দেখা যাচ্ছে ফাইভ-জি।
মেলায় ২৫টি স্টল, ২৯টি মিনিপ্যাভিলিয়ন এবং ২৮টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। এতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ডিজিটাল অগ্রগতি তুলে ধরা হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সব সংস্থা- এতে অংশ নিয়েছে।
এছাড়া আইএসপি প্রতিষ্ঠান, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফোন অপারেটরসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান এতে অংশ গ্রহণ করেছে । মেলায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পৃথক কর্নার রাখা হয়েছে। সেই কর্নারে প্রযুক্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবনী তুলে ধরা হবে। মেলায় ১৩টি সেমিনারের মাধ্যমে সরকারের মাননীয় মন্ত্রী এবং দেশি ও বিদেশি অভিজ্ঞ বক্তারা বর্তমানের প্রযুক্তি ও আগামী দিনে প্রযুক্তির গন্তব্য নিয়ে কথা বলছেন। ট্যালেন্ট গ্যাপ, ডিজিটাল অর্থনীতি, ডিজিটাল গ্রোথ, এসডিজির অ্যাচিভমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে বক্তারা সেমিনার সমূহে আলোচনা করছেন।
আগামীকাল শনিবার বিকালে অর্থমন্ত্রী জনাব আ হ ম মুস্তফা কামাল ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ২০২০ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন।