করোনাভাইরাসের ঝুঁকির মুখে অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে প্রযুক্তি বিশ্বের দৃশ্যপট। অ্যাপলের চুক্তিভিত্তিক নির্মাতা জায়ান্ট ফক্সকন এবার নামছে ‘সার্জিক্যাল মাস্ক’ তৈরি করতে।
নিজেদের দৈনন্দিন ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন কাজ শুরু করার অনুমোদন পেতেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। করোনাভাইরাসের কারণে আপাতত বন্ধ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন কর্মকাণ্ড। ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ফলে বিশ্বব্যাপী মাস্কের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সার্জিক্যাল মাস্কের সরবরাহ অনেকটাই কম। ওই চাহিদা মেটাতেই মাঠে নামার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ফক্সকন। — খবর সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র।
চলতি মাসের শেষ নাগাদ প্রতিদিন ২০ লাখ মাস্ক তৈরির লক্ষ্য হাতে নিয়েছে ফক্সকন। এ বিষয়ে সামাজিক মাধ্যম উইচ্যাট-এর এক পোস্টে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, “মহামারীর বিরুদ্ধে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে প্রতিটি সেকেণ্ড মূল্যবান। যত তাড়াতাড়ি আমরা পূর্ব সতর্কতা শুরু করতে পারব, ঠিক ততোটাই তাড়াতাড়ি আমরা ভাইরাসটিকে ঠেকিয়ে দিতে পারবে। যত দ্রুত আমরা জীবন বাঁচাতে পারব, তত দ্রুত আমরা এটি কাটিয়ে উঠতে পারব।”
মাস্ক তৈরির কাজে নিজেদের ‘ফ্ল্যাগশিপ’ উৎপাদন কারখানাকে কাজে লাগানো হয়েছে বলেও বলেছে প্রতিষ্ঠানটি। চীনের দক্ষিণাঞ্চল শেনজেনের এক কারখানায় পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে ওই মাস্কগুলো। প্রথমাবস্থায় নিজ কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে মাস্ক তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে ফক্সকন। পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, “এটি শুধু ফক্সকনের কর্পোরেট দায়িত্ব নয়, সামাজিক দায়িত্বও বটে।”
পুরোপুরি উৎপাদন শুরু হয়ে গেলে প্রতিষ্ঠানের বাইরেও মাস্ক সরবরাহ করতে পারবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফক্সকন আরও জানিয়েছে, কর্মক্ষেত্রে কোনো প্রকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তে নতুন প্রজন্মের ‘ইনফ্রারেড তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রাংশ’ ব্যবহার করা হবে।
অনেক বিশ্লেষকের মতে, করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর বৈশ্বিক স্মার্টফোন রপ্তানি ১০ শতাংশ কমে যাবে, আইফোন রপ্তানিতে স্বল্পতা চোখে পড়বে, বিশেষ করে নতুন আইফোন ১১-এর বেলায়।
সার্জিক্যাল মাস্ক তৈরিতে শুধু ফক্সকন নয়, মার্কিন গাড়ি নির্মাতা জেনারেল মোটর্সও শামিল হয়েছে। নিজেদের চীনা যৌথ ভেঞ্চারের সঙ্গে মিলে দৈনিক ১৭ লাখ মাস্ক তৈরির লক্ষ্য হাতে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য ১৪টি উৎপাদন লাইনও বসানোর কথা জানিয়েছে জেনারেল মোটরস।