বিপজ্জনক কিংবা ক্ষতিকর অনলাইন কনটেন্ট বন্ধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আরো কঠোর আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ। সম্প্রতি জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তাবিষয়ক এক সম্মেলনে এমন আহ্বান জানান তিনি। খবর বিবিসি।
বিপজ্জনক কনটেন্ট, মিথ্যা খবর ও গুজব ছড়ানো এবং রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য জনপ্রিয় ফেসবুক বিশ্বজুড়ে ব্যাপক চাপ ও সমালোচনার মুখে রয়েছে। এছাড়া তথ্য কেলেঙ্কারির কারণে গত বছরজুড়ে বিশ্বের কয়েকটি দেশের আইনপ্রণেতাদের সামনে শুনানিতে হাজির হতে হয়েছিল ফেসবুক প্রধানকে।
মিউনিখে জাকারবার্গ বলেন, কোনো বক্তব্য আইনসম্মত বা বৈধ কিনা, তা যাচাই-বাছাই করা ফেসবুকের মতো কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজ হতে পারে না। একই সঙ্গে সামাজিক মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি আইন করা হলে তা সাধারণ মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে চীনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র এবং পরবর্তী সময়ে গোটা বিশ্বের জন্য রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বিষয়ে নতুন নীতিমালা চালু করেছিল ফেসবুক। এ নীতিমালার মধ্যে রয়েছে প্রচারণার জন্য অর্থ প্রদানকারীর নাম-পরিচয় বিজ্ঞাপনে উল্লেখ থাকতে হবে এবং ওই বিজ্ঞাপনের একটি কপি সার্চ করা যাবে, এমন ডাটাবেস যা পরবর্তী সাত বছরের জন্য সংরক্ষণ করা হবে।
তবে চলতি সপ্তাহে ফেসবুক ঘোষণা দিয়েছে, সোস্যাল মিডিয়ায় তারকাদের স্পন্সর করা রাজনৈতিক পোস্টগুলো ফেসবুকের ডাটাবেসে আর সংরক্ষণ করা হবে না। এছাড়া নীতি অনুযায়ী রাজনীতিবিদদের পোস্টগুলোর সত্য-মিথ্যাও সবসময় যাচাই করা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে সম্ভব না। যে কারণে সম্মেলনে মার্ক জাকারবার্গ বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতি কঠোর আইন প্রণয়নের বিষয়টিতে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
মার্ক জাকারবার্গ বিভিন্ন দেশের সরকারকে সোস্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে নতুন আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এখন প্রচলিত টেলিকম ও মিডিয়া জায়ান্টগুলোর আইনের মিশ্রণেও হতে পারে নতুন আইন। তবে নতুন কোনো আইন তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত ফেসবুক ক্ষতিকর কনটেন্ট ঠেকাতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
অন্যদিকে যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া ও বিপজ্জজনক কনটেন্ট তৈরি করে, তারাও বর্তমানে নিজেদের পরিচয় গোপন করতে আইপি অ্যাড্রেস লুকিয়ে রাখার কাজে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করছে বলে জানান তিনি। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ফেসবুকের ৩৫ হাজার কর্মীর একটি দল কাজ করছে সর্বক্ষণ। যাদের মূল কাজ প্রতিটি কনটেন্ট মূল্যায়ন এবং এর নিরাপত্তার দিকটি খতিয়ে দেখা। তাছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিদিন ১০ লাখের বেশি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলেও এ সময় মন্তব্য করেন ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ।