মিলিটারি ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজিতে (এমআইএসটি) সাইবার রেঞ্জ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধ ও পাল্টা আক্রমণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানে এই রেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে জানান পলক।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এমআইএসটির উদ্যোগে জাতীয় কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা (এনসিপিসি) ২০২০ এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। ইন্সটিউটি এর মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এসময় পলক বলেন, সারা বিশ্ব এখন সাইবার ঝুঁকিতে রয়েছে। সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে ব্যক্তি, পরিবার ও দেশের ক্ষতি করা যায়। সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধ ও পাল্টা আক্রমণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এম আই এস টিতে সাইবার রেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করা হবে। তরুণ প্রজন্মকে হোমগ্রোন সলিউশনের পাশাপাশি গ্লোবাল সলিউশনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন সমস্যার উদ্ভাবনমূলক সমাধান খুঁজে বের করে সমাধান করার আহবান জানাচ্ছি।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে জাতিকে প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন করে তৈরি করতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ গড়ে তুলতে সরকার উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আট হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এছাড়া দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্পেশালাইজড ল্যাব প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইনোভেশন বা উদ্ভাবনই হচ্ছে প্রতিটি জাতির মূল শক্তি। উদ্ভাবনী কাজে তরুণ এবং স্টার্টাপদের এগিয়ে নিতে আইসিটি বিভাগের আইডিয়া প্রকল্পের আওতায় তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য সিড স্টেজে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অনুদান এবং গ্রোথ স্টেজে এক কোটি থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত ভেঞ্চার ক্যাপিটাল হিসেবে প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও মেন্টরিং,কোচিংসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
পলক বলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১১ বছরে গৃহীত বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশে এখন মোবাইল ও ল্যাপটপ এর হার্ডওয়ার ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে। দেশি-বিদেশি ১১টি শিল্প কারখানা স্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশে তৈরি মোবাইল ও ল্যাপটপ বিদেশে রফতানি করা হচ্ছে। দেশে এখন প্রায় ১৬ কোটি মোবাইল ফোন সংযোগ রয়েছে। প্রায় ১০ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। ২০২১ সাল নাগাদ দেশের ৯০ শতাংশ জনগণকে ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসা হবে। আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে প্রায় তিন হাজার সরকারি সেবা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালেরয় ১৫০টি দল জাতীয় কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা (এনসিপিসি) ২০২০ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোয়াম্প ফায়ার (SWAMP FIRE) দল প্রথম স্থান অধিকার করে এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। পরে প্রতিমন্ত্রী বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন এমআইএসটি এর কমান্ডেন্ট মেজর জেনারেল ওয়াহিদ উদ জামান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফর্মেশন সার্ভিসেস এর ভাইস এরপ্রেসিডেন্ট মুশফিকুর রহমান, এমআইএসটি এর সিএসই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।
এসময় বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি হেড, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ, বিচারকবৃন্দ ও স্পন্সর প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।