ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, উদ্ভাবন হচ্ছে আগামী দিনের চালিকা শক্তি। যে উদ্ভাবন করবে না, সে টিকবে না। ২০৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ এবং ডিজিটাল প্রযুক্তিই হবে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের হাতিয়ার। সেই প্রযুক্তি আমরাই তৈরি করব। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব হচ্ছে ডিজিটাল শিল্প বিপ্লব। এই বিপ্লবের চরিত্রই হচ্ছে অতীতের সকল বিপ্লব অতিক্রম করে নতুন নতুন প্রযুক্তিকে আলিঙ্গণ করে সভ্যতার নতুন স্তর নির্মাণ করা, ডিজিটাল সভ্যতা গড়ে তোলা। ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন, প্রয়োগ ও সম্প্রসারণে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক সাথে কাজ করবে।
মন্ত্রী গত রাতে ঢাকায় বিআইসিসিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আইটি পরিদপ্তর ও সিগন্যাল পরিদপ্তর এবং বিটিসিএল এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বর্তমানে মানুষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসটার নাম ইন্টারনেট, এটি শ্বাস প্রশ্বাসের মতো প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেটকে মেক্সিকোসহ পৃথিবীর কোন কোন দেশ ৬ষ্ঠতম মৌলিক অধিকার হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছে। পৃথিবীর সকল দেশ একদিন মেক্সিকোকে অনুসরণ করবে। আমাদের গর্বের বিষয় পৃথিবীতে দেশের নামের আগে আমরাই ডিজিটাল শব্দ যোগ করেছি। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম সারা দুনিয়াকে ডিজিটাল শব্দটা শুনিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত এগারো বছরে বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রযুক্তি দুনিয়ায় নেতৃত্বের যোগ্যতা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি এবং রোবটিক্স প্রযুক্তিসহ যে সব ডিজিটাল প্রযুক্তিতে পৃথিবী আজ প্রবেশ করেছে তা সেনাবাহিনীর জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ জনগণের জন্যও তেমনি অপরিহার্য।
তিনি বলেন, জাতি হিসেবে বাঙালি মেধাবি জাতি। মেধাকে ব্যবহার করতে পারলে আমাদের ভবিষ্যত আমরাই তৈরি করব।
ডিজিটাল বিপ্লবের যুগে প্রচলিত সমরাস্ত্রের মধ্যে যুদ্ধ বিগ্রহ থেমে থাকবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মনুষ্যবিহীন ড্রোন দিয়ে হাজার হাজার মাইল দূর থেকেও অভিষ্ট লক্ষ ভেদ করা হচ্ছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিতে পেছন থেকে মানুষ হয়ত প্রোগ্রামিং করবে যুদ্ধ করবে রোবট। হয়ত বিমানের বদলে ড্রোন দিয়ে যুদ্ধ করা সেটাও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
বিটিসিএল এর সাথে সমঝোতা চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কারিগরি জনবল প্র্যাকটিক্যাল ফিল্ডে কাজ করার সুযোগ পাবে যা তাদের আরও দক্ষ করে তুলবে। এই সমঝোতার আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীল আইটি পরিদপ্তর ও সিগনাল পরিদপ্তর এবং বিটিসিএল তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের দক্ষ জনবল কাজে লাগিয়ে সরকারের টেকসই ডিজিটাল অবকাঠামে বিনির্মাণ ও চালনায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে এবং আইটি ও টেলিযোগাযোগ গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে অবদান রাখবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: নূর- উর- রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমত উল্লাহ, এমপি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চীফ অব জেনারেল স্টাফ লে. জেনারেল মো: সফিকুর রহমান এবং বিটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিন বক্তৃতা করেন।