করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিহত করতে সন্ত্রাস-বিরোধী প্রযুক্তির ব্যবহার ও আংশিকভাবে নিজেদের অর্থনীতি বন্ধ রাখার পরিকল্পনা করেছে ইসরায়েল। শনিবার বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।
জেরুজালেমে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু জানান, মন্ত্রীসভার অনুমোদন সাপেক্ষে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের সাইবার প্রযুক্তি নজরদারি প্রয়োগের মাধ্যমে খুঁজে বের করা হবে। “আমরা খুব শীঘ্রই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করব … ডিজিটাল পন্থা যা সন্ত্রাসবাদ রোধে আমরা ব্যবহার করছি।” – বলেছেন নেতানিয়াহু।
বিষয়টির কারণে রোগীদের গোপনতা লঙ্ঘন ঘটতে পারে, তাই বিচার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। সতর্কতা হিসেবে মল, হোটেল, রেস্টুরেন্ট এবং থিয়েটার শনিবার থেকে বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে নেতানিয়াহু সরকার, এ ছাড়াও কর্মীদেরকে প্রয়োজন ছাড়া তাদের কর্মক্ষেত্রে যেতেও মানা করা হয়েছে।
তবে, ফার্মেসি, সুপারমার্কেট ও ব্যাংকের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবাগুলো নিজ নিজ কার্যক্রম চালিয়ে যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে। মানুষকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং এক ঘরে ১০ জনের বেশি একত্রিত না হওয়ার ব্যাপারে আহবান জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
এদিকে, নেতানিয়াহু ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে করোনাভাইরাস প্রতিহতে নিজেদের প্রযুক্তি সক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের দেশীয় নিরাপত্তা সেবাদাতা ‘দ্য শিন বেট’। ইসরায়েলের ‘অ্যাসসিয়েশন ফর সিভিল রাইটস ইন ইসরায়েল’-এর সঙ্গে কর্মরত গোপনতা বিশেষজ্ঞ অ্যাভনার পিনচুক জানিয়েছেন, এ ধরনের সক্ষমতা আক্রান্ত ব্যক্তিকে ‘রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিংয়ে’ রাখতে পারবে। এর ফলে ওই ব্যক্তি কোয়োরেন্টিন লঙ্ঘন করছেন কিনা তা জানা যাবে এবং মেটা-ডেটা ব্যবহার করে জানা সম্ভব হবে তারা কোথায় গিয়েছিলেন এবং কার কার সঙ্গে সংস্পর্শে এসেছিলেন।
“আমি এ ঘোষণাটি নিয়ে চিন্তিত। বুঝতে পারছি যে ভিন্ন এক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা, কিন্তু নতুন পদক্ষেপগুলো কীভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করবে।” – বলেছেন পিনচুক।
শিন বেট অবশ্য নিজ বিবৃতিতে জানিয়েছে, কোয়ারেন্টিন প্রয়োগে প্রযুক্তি ব্যবহার হবে না। “আইসোলেশন নীতিমালার বিচারে কোয়ারেন্টিন প্রয়োগ বা ট্র্যাকিংয়ে এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো পরিকল্পনা নেই।”
ভাইরাসটিকে “অদৃশ্য শত্রু” আখ্যা দিয়ে নেতানিয়াহু বলেন “একে অবশ্যই শনাক্ত করতে হবে”। এটি এমন একটি ব্যাপারে পরিণত করা ও ব্যাখ্যা করা সহজ কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। এর আগে তাইওয়ান একই ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
“প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এতগুলো বছরে আমি সবসময় চেষ্টা করেছি এ ধরনের হিসেব থেকে সাধারণ নাগরিকদের বাইরে রাখতে, কিন্তু এখন আর পথ খোলা নেই।” – বলেছেন নেতানিয়াহু।