মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর হওয়ার আগেই চীনের মূল ভূখণ্ডে উৎপাদন বাড়াচ্ছে হুয়াওয়ের চিপ ইউনিট। এতোদিন চিপ তৈরির কাজটি করতো তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডে (টিএসএমসি)।
টিএসএমসি থেকে পর্যায়ক্রমে উৎপাদন কমিয়ে আনছে চীনা প্রতিষ্ঠানটি এমনটাই দাবি করেছেন বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র। — খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদন বলছে, টিএসএমসি’র কাছে উৎপাদন কমিয়ে চীনের শাংহাইভিত্তিক সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশনের (এসএমআইসি) কাছে চিপ উৎপাদনের লক্ষ্যে এগোচ্ছে হুয়াওয়ে।
মার্কিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি চিপ বা যে কোনো যন্ত্রাংশ বানিয়ে হুয়াওয়ের কাছে বিক্রি করতে চায়, তবে ওই প্রতিষ্ঠানটিকে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্স নিতে হবে, এমন নীতিমালা গ্রহন করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই নীতির পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে তার প্রভাব সরাসরি পড়বে টিএসএমসি’র ওপর। তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি সারছে হুয়াওয়ে।
জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকির কথা বলে চীনা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রচারণা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির দাবি, বেইজিংয়ের পক্ষে গ্রাহকের ওপর নজরদারি চালাতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। মার্কিন এ অভিযোগ বরাবরই নাকচ করে আসছে চীনা প্রতিষ্ঠানটি।
আগের বছরই যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকাভুক্ত করা হয় হুয়াওয়েকে, ফলে মার্কিন কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিশেষ অনুমতি ছাড়া হুয়াওয়ের সকল যোগাযোগ ও বাণিজ্য কার্যত বন্ধ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র জানিয়েছেন, টিএসএমসি’র বদলে এসএমআইসি’র জন্য চিপ নকশা করার লক্ষ্যে ২০১৯ সালের শেষ দিকে প্রকৌশলী পাঠাতে শুরু করেছে হুয়াওয়ের চিপ ইউনিট হাইসিলিকন।
ওই সূত্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, “আগে হুয়াওয়ে শুধু শীর্ষস্থানীয় উৎপাদনকারীর সঙ্গে কাজ করতে চাইতো এবং এসএমআইসি ছিলো দ্বিতীয় বিবেচনা। আমরা এখন এসএমআইসিতে আমাদের রিসোর্স সরিয়ে আনছি যাতে প্রতিষ্ঠানটিতে আমাদের সহায়তার গতি বাড়ানো যায়।”
এসএমআইসি’র কাছে হুয়াওয়ে উৎপাদন কী পরিমাণ বাড়িয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হয়নি। চিপ উৎপাদনের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান এবং চীনের মূল ভূখণ্ডে অন্যান্য বিকল্প খোঁজা হবে বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতি গ্রাহক থেকে প্রতিষ্ঠানের কী পরিমাণ আয় হয় তা নির্দিষ্ট করে জানায় না টিএসএমসি। তবে, বিশ্লেষকদের ধারণা ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানের আয়ের ১৩ থেকে ১৫ শতাংশ এসেছে হুয়াওয়ে থেকে।
টিএসএমসি-কে এখনই পুরোপারি বাদ দেওয়াও হয়তো সম্ভব নয় হুয়াওয়ের পক্ষে।
বর্তমানে ৫ ন্যানোমিটার প্রসেস নিখুঁত করতে কাজ করছে টিএসএমসি। অন্যদিকে ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ ১৪ ন্যানোমিটার প্রসেস চালু করেছে এসএমআইসি, যা টিএসএমসি কয়েক বছর আগেই চালু করেছে।
হাইসিলিকনের নতুন কিরিন প্রসেসরগুলো শুধু হুয়াওয়ের স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয়। এই মুহুর্তে এটি বানাতে পারবে শুধু টিএসএমসি।