আপনার স্মার্টফোন শিগগির আপনার কাশি শুনতে পারবে এবং ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারবে যে, আপনি করোনায় আক্রান্ত কিনা।
সুইজারল্যান্ডের ইকোল পলিটেকনিক ফেডারেল দে লাউসেনের একদল বিজ্ঞানী ‘কফভিড’ নামের একটি অ্যাপ তৈরি করছেন, যা কাশি শুনবে এবং এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্ধারণ করবে- কাশির শব্দটা করোনা রোগীর মতো কিনা।
বিজনেস ইনসাইডারকে গবেষকদলটির সদস্য টমাস তেইজেইরো বলেন, ‘এ ধরনের অ্যাপ তৈরিতে আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছি চিকিৎসকদের একটি প্রতিবেদন থেকে। যেখানে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ রোগীদের স্বতন্ত্র কাশির শব্দ দেখা গেছে, যা পরে জোরে শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে নিয়ে যায়- এটি অন্যান্য অসুস্থতার তুলনায় আলাদা।
তেইজেইরো বলেন, ‘চিকিৎসদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের বলেছেন যে, রোগী সম্ভাব্য সংক্রামিত হলে কাশির শব্দের পার্থক্যটা তারা ধরতে পেরেছিলেন।’
‘কফভিড’ দলটি বর্তমানে এআইকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ডেটা সংগ্রহ করছেন। ইতিমধ্যে ১৫ হাজারের বেশি মানুষের কাশির শব্দের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মধ্যে ১০০০টি নমুনা এমন মানুষদের কাছ থেকে এসেছে যারা কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত। প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হওয়ার এআই প্রযুক্তি নির্ধারণ করতে পারবে- অ্যাপটির ব্যবহারকারীর কাশি সাধারণ নাকি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কাশি
তেইজেইরোর মতে, ব্যবহারকারীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা বা আরো চিকিত্সার প্রয়োজন কিনা সে পরামর্শ দেওয়ার জন্য ‘কফভিড’ অ্যাপটি একটি টুলস হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
করোনা মহামারির বিস্তার ঠেকাতে অ্যালগরিদমভিত্তিক সমাধানের অনেকগুলো প্রচেষ্টার মধ্যে একটি হচ্ছে, কফভিড। গত সপ্তাহে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান করোনাভাইরাস সম্পর্কে পূর্বাভাস দেয়ার প্রয়াসে শ্বাসকষ্ট, কথা বলার ধরন এবং কাশি বিশ্লেষণমূলক এআই প্রযুক্তির অ্যাপ নিয়ে কাজ করছে।
অন্যদিকে সমালোচকরা বলছেন, প্রযুক্তি সম্প্রদায় করোনাভাইরাসকে চটকদার সমাধান দিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, যা অনিচ্ছাকৃত নেতিবাচক পরিণতি ঘটাতে পারে। কেমব্রিজের কম্পিউটার সায়েন্সের প্রফেসর রস অ্যান্ডারসন বলেন, ‘এ ধরনের সমাধানগুলো নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন, কারণ এগুলো হালকা লক্ষণযুক্ত রোগীদেরকে ভাইরাসটি সম্পর্কে আরো উদ্বিগ্ন করে হাসপাতালে রোগীর বন্যা সৃষ্টি করতে পারে।’
তবে তেইজেইরো বিজনেস ইনসাইডারকে জানান, অ্যাপটির উন্নয়ন এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং এটিকে কীভাবে সবচেয়ে ভালোভাবে তৈরি করা যায় সে লক্ষ্যে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। অন্তত আরো দুই মাস ডেটা সংগ্রহ করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি দুর্দান্ত ব্যাপার দেখতে পাচ্ছি। অন্যান্য গবেষক দলগুলোও কম-বেশি একই পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছে। তাই আমরা মনে করি, এটির একটি ভূমিকা রয়েছে। খুব শিগগির আমরা এ ব্যাপারটি আরো স্পষ্ট করতে পারবো।’