দুই হাজারেরও বেশি অ্যানালিস্ট, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এবং টেলিকম, ইন্টারনেট ও ফাইন্যান্স সহ বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞ এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে চীনের শেনজেনে অনুষ্ঠিত হয়েছে হুয়াওয়ের ১৭তম বার্ষিক গ্লোবাল অ্যানালিস্ট সামিট। অনসাইট ও অনলাইন দু’ভাবেই এ সামিট অনুষ্ঠিত হয়েছে। একসাথে কাজ করে কীভাবে কঠিন সময়গুলোকে অতিক্রম করা যায়, সবার জন্য লাভজনক পরিস্থতির সুযোগ তৈরি করা যায় এবং কীভাবে ইন্টেলিজেন্ট ওয়ার্ল্ডের বিষয়টিকে ত্বরান্বিত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেন সামিটে অংশগ্রহণকারীগণ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান গুয়ো পিং মূল বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বক্তব্যের শুরুতেই গত এক বছরে বিভিন্ন বিষয়ে হুয়াওয়ের অভিজ্ঞতা ও ব্যবসায়িক ফলাফল তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘গত এক বছরে আমরা অনেক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারিনি। এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে, আমাদের টিকে থাকতে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে; তা সত্ত্বেও সকলের নিরন্তর প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে গেছি।’
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে হুয়াওয়ে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই, বিশ্বকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আরও অধিক ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ হুয়াওয়ে। বিগত ৩০ বছরেরও অধিক সময় ধরে হুয়াওয়ে ১শ’ ৭০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে বিশ্বজুড়ে ৩শ’ কোটিরও বেশি মানুষকে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ১৫শ’ এর বেশি নেটওয়ার্ক স্থাপন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ৬০ কোটি গ্রাহককে স্মার্ট ডিভাইস সরবরাহ করেছে। হুয়াওয়ের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র হুয়াওয়েকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে না পাশাপাশি যেসব গ্রাহক হুয়াওয়ের পণ্য ব্যবহার ও সেবা গ্রহণ করছেন তাদেরকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
ইন্টেলিজেন্ট ওয়ার্ল্ডের ভিত্তিই হচ্ছে আইসিটি অবকাঠামো। আইসিটি খাত বেশ সম্ভাবনাময়। ২০২৫ সালের মধ্যে ডিজিটাল অর্থনীতি ২৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের একটি খাতকে প্রতিনিধিত্ব করবে। ইন্টেলিজেন্ট ওয়ার্ল্ডের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে, হুয়াওয়ে আইসিটি খাতের প্রতিকূলতার চেয়ে সুযোগ ও সম্ভাবনাগুলোকেই বেশি দেখতে পাচ্ছে ।
ভবিষ্যতেও হুয়াওয়ে তিনটি ক্ষেত্রে: কানেক্টিভিটি, কম্পিউটিং ও স্মার্ট ডিভাইস এর উদ্ভাবন ও বিনিয়োগ চলমান রাখবে। অংশীদারিত্ব, খাতের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের লক্ষ্যে উৎসাহ প্রদানে আমরা সাপ্লাই চেইন, স্ট্যান্ডার্ডস, ট্যালেন্ট কালটিভেশন সহ অন্যান্য খাতেও গ্রাহক, অংশীদার ও স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশনের সাথে কাজ করবো।
এ নিয়ে গুয়ো পিং বলেন, ‘বর্তমান বিশ্ব একটি সমন্বিত সহযোগিতামূলক সিস্টেমের ওপর পরিচালিত। বিশ্বায়নের যে ধারা বহমান রয়েছে তা পরিবর্তন করা উচিত হবে না। ঐক্যহীন সাপ্লাই চেইন কারো জন্য কল্যাণকর হবে না বরং ঐক্যহীনতা পুরো খাতের ওপর তীব্র প্রভাব ফেলবে। এ খাতের সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে আইপিআর সুরক্ষা, সুস্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা, বৈশ্বিক মানদণ্ডকে রক্ষা ও সহযোগিতাপূর্ণ বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে হবে।’
প্রথম হুয়াওয়ে গ্লোবাল অ্যানালিস্ট সামিট অনুষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে। এরপর থেকে প্রতিবছরই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ বছর সামিটটি চলবে ১৮-২০ মে পর্যন্ত। তিন দিনব্যাপী এ সামিটটিতে বিভিন্ন সেশন রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে অংশ নেয়া ব্যক্তি এবং এ খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা সামিটে এ শিল্পখাতের গতিপ্রকৃতি, প্রযুক্তির ধারা ও বৈশ্বিক সহযোগিতার বিষয় নিয়ে তাদের মূল্যবান বক্তব্য রাখবেন। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://www.huawei.com/en/press-events/events/has2020
ছবি: হুয়াওয়ের ১৭তম বার্ষিক গ্লোবাল অ্যানালিস্ট সামিটে বক্তব্য দিচ্ছেন হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান গুয়ো পিং