কভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিধ্বস্ত বৈশ্বিক অর্থনীতি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। এ অবস্থায় স্মার্টফোন ও টিভির মতো উচ্চাভিলাষী পণ্য কেনা থেকে স্বাভাবিকভাবেই দূরে রয়েছে মানুষ। এ কারণেই এসব প্রযুক্তিপণ্যের বাজার মন্দা অবস্থায় রয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের ওপর। কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে স্মার্টফোনের বাজার থেকে যেসব কোম্পানির আয় কমেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স তাদের অন্যতম। চলতি বছরের দুই প্রান্তিকে (জানুয়ারি-জুন) এ খাত থেকে প্রতিষ্ঠানটির আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। তবে একই সময়ে স্যামসাংয়ের জন্য কভিড-১৯ অন্যভাবে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। কারণ বিশ্বব্যাপী এ সময় অন্যান্য প্রযুক্তি পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। যে কারণে এ সময় স্যামসাংয়ের তৈরি চিপের চাহিদাও ছিল বেশ। ফলে স্মার্টফোন বিক্রির লোকসান সহজেই চিপের মাধ্যমে কাটিয়ে উঠতে পারবে বিশ্ববাজারে স্মার্টফোন সরবরাহকারী অন্যতম এ জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটি বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। খবর আইএএনএস।
প্রযুক্তিপণ্যের অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ হলো চিপ। আর বিশ্ববাজারে মেমোরি চিপ ও স্মার্টফোনের অন্যতম শীর্ষ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হলো স্যামসাং। তবে কভিড-১৯-এর প্রভাবে অর্থনীতির ধস প্রতিষ্ঠানটির আয়ের ওপর ভালোভাবেই পড়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিধ্বস্ত বাজারের প্রভাবে কোম্পানিটির আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে এসেছে। শুরুতে দ্বিতীয় প্রান্তিকে আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হলেও এখন চিপ বিক্রির উল্লম্ফন থেকে সে প্রাক্কলন থেকে সরে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ নিউজ এজেন্সির অর্থনীতিবিষয়ক শাখা ইয়োনহাপ ইনফোম্যাক্স স্যামসাংয়ের ডাটা একত্র করে একটি প্রাক্কলন প্রতিবেদন তৈরি করে। সেখানে দেখানো হয়, সদ্য শেষ হওয়া দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ৫৩ লাখ ৩৯ হাজার কোটি ওনে (স্থানীয় মুদ্রা) বা ৪ হাজার ৪৪০ কোটি ডলারে নেমে আসতে পারে। আর একই সময়ে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমে ৬ লাখ ৪৪ হাজার কোটি ওনে দাঁড়াতে পারে বলে প্রাক্কলন করা হয়।
তবে সদ্য শেষ হওয়া জুনের প্রথম দুই সপ্তাহের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রাক্কলনের তুলনায় স্যামসাংয়ের বিক্রি ও পরিচালন মুনাফা আরো কমে আসছে। এ সময় স্যামসাংয়ের বিক্রি ৫০ ট্রিলিয়ন বা ৫০ লাখ কোটি ওনের মতো হতে পারে বলে বিশ্লেষণে উঠে আসে। একই
সময়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালন মুনাফা দাঁড়াতে পারে প্রায় ৬ ট্রিলিয়ন ওন বা ৬ লাখ কোটি ওনের মতো।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের চিপ ব্যবসায় ভালো উল্লম্ফন দেখা দিতে পারে। তাদের মতে, এ প্রান্তিকে চিপ ব্যবসা থেকে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা ৫ ট্রিলিয়ন ওন বা ৫ লাখ কোটি ওন হতে পারে। যেখানে প্রথম প্রান্তিকে এর পরিমাণ ছিল ৪ ট্রিলিয়ন বা ৪ লাখ কোটি ওন।