ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, শিক্ষকদের যে জাতি সম্মান দেয় না সে জাতি কখনো এগুতে পারে না। সমাজে যার মর্যাদা যে ভাবেই চিহ্নিত করা হোক শিক্ষকরাই সবচেয়ে বেশী সম্মানিত। শিক্ষকতা কেবল চাকুরি বা রুটিন কাজ করেন তা নয় । তারা মানব সম্পদ তৈরির কারিগর।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় ওয়েবিনারে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয় শিক্ষক দিবস- ২০২০ উদযাপন কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. কাজী ফারুক আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আক্তারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. হারুন অর রশিদ, সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, বাংলাদেশে ইউনেস্কো প্রতিনিধি বিটরিক কালডান (Ms. Beatrice Kaldun)এবং গণস্বাক্ষরতা কর্মসূচির ড. এনামুল হক বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাল যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থায় রূপান্তরের অপরিহার্য উল্লেখ করে বলেন, চক ডাস্টারের পরিবর্তে ডিজিটাল ক্লাশরুম এবং কাগজের বইয়ের পরিবর্তে ডিজিটাল কনটেন্ট দরকার। সংকট মোকাবেলায় আগামী দিনের প্রস্তুতি নিতে হবে। শিক্ষকদের ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কারণ আমাদের লক্ষ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে সক্ষমতা অর্জন করা। আমাদের উদ্দেশ্য বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে প্রথম শিল্প বিপ্লব যুগের প্রয়োজনীয়তার আদলে। দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবেও ইংরেজ প্রবর্তিত আমাদের এই শিক্ষা ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন ঘটেনি। তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে আইটি তথ্য প্রযুক্তি যুক্ত হয়। কিন্তু শিক্ষা ব্যবস্থা আগেরটিই থেকে যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার বড় পরিবর্তন করেন। তিনি দেশে দশ হাজার প্রোগ্রামার তৈরির ব্যবস্থা করেন, ভিসেটের মাধ্যমে ইন্টারনেট চালু করেন এবং কম্পিউটার সহজলভ্য করতে সকল প্রকার কর কম্পিউটারের ওপর থেকে প্রত্যাহার করেন। এই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সাল থেকে গত এগারো বছরে শিক্ষার আধুনিকায়নসহ সবক্ষেত্রে আমুল রূপান্তর ঘটেছে। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু না করলে করোনাকালে জীবন যাপনের কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারতাম না।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয় করণ এবং যুগোপযোগী শিক্ষার জন্য ড.কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন কমিশনের উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষাই হচ্ছে একটি জাতিকে এগিয়ে নেওয়ার বড় হাতিয়ার। তিনি বলেন, প্রযক্তি হচ্ছে মানুষের জন্য ,প্রযুক্তির জন্য মানুষ নয়। আমাদের সন্তানরা অত্যন্ত মেধাবি। শিক্ষকদের হাতেই তাদের মেধার বিকাশ ঘটে। এই কারণে শিক্ষক সমাজকে বিকশিত করতে না পারলে কোন জাতিও বিকশিত হতে পারে না।
অনুষ্ঠানে বক্তারা শিক্ষকদের ক্ষমতায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, শিক্ষকদের ক্ষমতায়নের জন্য যা যা করণীয় তা করতে হবে। শিক্ষার জন্য খরচকে ভবিষ্যত বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে হবে। তারা বলেন, শিক্ষায় তৃণমূলকেও গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষকদের নিয়ে কাজ করতে হবে।