ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, শতাব্দীর প্রাচীন ধ্যান-ধারণা পরিহার করে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে। তা না হলে বিদ্যমান জনশক্তি কাজে লাগানো যাবে না। এই লক্ষ্যে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ডিজিটাল শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা অপরিহার্য। এর বাইরে বিদ্যমান প্রচলিত শিক্ষায় শিক্ষিতদের জন্য ডিজিটাল দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ প্রদান করার মাধ্যমে উপযোগী করে তৈরি করার জন্য সরকারের গৃহীত উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে এগিয়ে আসাতে হবে।
ডিজিটাল প্লাটফর্মে গ্রামীণফোন আয়োজিত জিপি এক্সপ্লোর শীর্ষক তিন মাসব্যাপী ডিজিটাল দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আজ রবিবার তিনি এ আহ্বান জানান।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কম্পিউটার বিষয় বাধ্যতামূলক হওয়া সত্ত্বেও খুব কমসংখ্যক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এর যথাযথ আউট পুট পাওয়া যাচ্ছে। কম্পিউটার ল্যাব আছে কিন্তু ব্যবহারের ক্ষেত্রে দক্ষতা সম্প্রসারিত হচ্ছে না। এ জন্য যে ঘাটতিটা আছে তা শনাক্ত করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হাতে হাতে ডিজিটাল ডিভাইস দিতে না পারলে এগিয়ে যাওয়া কঠিন হবে বলে দেশের কম্পিউটার বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার উল্লেখ করেন। মন্ত্রী দেশের শতকরা ৬৫ ভাগ তরুণ জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে পরিণত করার মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হিসেবে তৈরি করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ’৮৭ সালে প্রথম কম্পিউটার দিয়ে পত্রিকা বের করেছি। ওই সময় যারা টাইপ শিখেছিল আজ তারা প্রযুক্তি দুনিয়ায় ভাল অবস্থানে পৌঁছেছেন। যাদের সেদিন ফটোশপ বা ইলেস্ট্রেটর শিখিয়েছি তারা আজ আইসিটি জগতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তিনি বলেন,কমিউনিকেশন্স দক্ষতা অর্জনের জন্য কেবল ইংরেজি নয় শুদ্ধ করে বাংলা বলার ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে গত এগারো বছরের পথ চলায় বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার যোগ্যতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। করোনাকালে আমাদের জীবনধারায় এক অভাবনীয় পরিবর্তন এনে দিয়েছে। অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্বকারী দেশ সমূহের তুলনায় আমাদের জীবনযাত্রায় খুব একটা কমতি ছিল না। একসময় ইন্টারনেট শহরের মানুষদের চাহিদার মধ্যেই অনেকটা সীমাবদ্ধ ছিল কিন্ত করোনাকালে প্রত্যন্ত গ্রামের শিশুটিও এখন ইন্টারনেট চায়। আমরা আমাদের বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মানুষের ইন্টারনেটের বর্ধিত চাহিদা মেটাতে সফল হয়েছি।
তিনি গ্রামীণ ফোনসহ অন্যান্য মোবাইল অপারেটরসমূহকে দ্রুততার সাথে ৪জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের নির্দেশ প্রদান করে বলেন, প্রযুক্তিতে শত শত বছর পিছিয়ে থেকেও ডিজিটাল প্রযুক্তির লেটেস্ট ভার্সন ৫জি চালুর পথ নকশা তৈরি আমরা সম্পন্ন করেছি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক সাবেক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আক্তার হোসেন এবং গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।