ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, আমদানি নির্ভর জাতি থেকে বাংলাদেশ এখন মোবাইলসেটসহ ডিজিটাল ডিভাইসের উৎপাদক ও রপ্তানিকারক দেশে রূপান্তর লাভ করেছে। আমরা আমেরিকায় মোবাইল রপ্তান করছি। বিশ্বের ৮০টি দেশে আমরা সফটওয়্যার রপ্তানি করছি। সৌদিআরবে আইওটি ডিভাইস রপ্তানি হচ্ছে। নেপাল ও নাইজেরিয়ায় ল্যাপটপ ও কম্পিউটার রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। দেশের চাহিদার শতকরা ৬০ ভাগ স্থানীয় কারখানার উৎপাদিত মোবাইল থেকে মেটানো সম্ভব হচ্ছে।
তিনি বলেন মেধাবি জাতি হিসেবে আমরা অতীতের শতশত বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অংশিদার। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর কাছে দৃষ্টান্ত।
মন্ত্রী সোমবার ঢাকার অদূরে টঙ্গীতে ফাইভস্টার মোবাইল কোম্পানির নিজস্ব ভবনে কারখানার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ফাইভ স্টার মোবাইল কোম্পানির চেয়ারম্যান মো: অলিউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল,গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা মহাজোট চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের প্রাক্তন মহাসচিব মনিরুল হক বক্তৃতা করেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডিজিটাল ডিভাইস বিশেষ করে স্মার্ট ফোন মানুষের জীবন যাত্রায় শ্বাস প্রশ্বাসের মতো অপরিহার্য। ১৯৬৪ সালে আইবিএম কম্পিউটারে যা করা যেতো স্মার্ট ফোনে এখন তার চাইতে হাজার গুণ বেশি কিছু করা হচ্ছে। দেশে ডিজিটাল ডিভাইস বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, জাতিগতভাবে বাঙালির বড় শক্তির নাম হচ্ছে মেধা। তিনি বলেন, দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ এর দিক নির্দেশনায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ প্রায় প্রতিটি ইউনিয়ন উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের আওতায় আনার কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পথে। ৪জি মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সম্প্রসারণের কার্যক্রম চলছে। সরকারের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার ফলে আমাদের সন্তানেরা রোবটও উৎপাদন করবে এবং বিদেশে তা রপ্তানি করবে এবং সেদিন বেশি দূরে নয়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ২০০৮ সালে ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি দূরদর্শী বৈপ্লবিক কর্মসূচি উল্লেখ করে বলেন, ইংল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম এবং মালদ্বীপসহ বিশ্বের অনেক দেশ এমনকি ২০১৬ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ঘোষণার মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বিশ্ব ঘোষণা প্রদান করে। করোনাকালে অচল জীবনযাত্রা সচল রাখতে এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের মানুষের জীবন যাত্রা উন্নত বিশ্বের মানুষের জীবন যাত্রা থেকে পিছিয়ে থাকেনি। এশিয়ার অনেক দেশের জিডিপি যেখানে ঋণাত্নক সেখানে বাংলাদেশ শতকরা ৫দশমিক ৮ ভাগ থেকে ৭ ভাগ জিডিপি অর্জন করে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের সুফলের ধারাবাহিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে তিনি উল্লেখ করেন।