উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দেশের প্রথম হাই-টেক পার্ক ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’-তে কাজ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে তিনটি প্রতিষ্ঠান আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে পৃথক তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের কনফারেন্স রুমে এই সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। জমি বরাদ্দ সংক্রান্ত তিনটি চুক্তিতেই বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম এনডিসি স্বাক্ষর করেন।
বিশ্বের নামকরা নিরাপত্তা নজরদারী সলিউশন ব্র্যান্ড ‘হিকভিশন’-এর অত্যাধুনিক নিরাপত্তা নজরদারী যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য ব্র্যান্ডের ডিজিটাল ডিভাইস, নেটওয়ার্কিং, টেলিকম, এআই ও রোবটিক্স যন্ত্রপাতি তৈরি করবে এক্সেল ইন্টেলিজেন্ট সলিউসন্স লি.। এলক্ষ্যে কালিয়াকৈরস্থ ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’-তে প্রতিষ্ঠানটিকে দুই একর জমি বরাদ্দ করেছে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ । এক্সেল ইন্টেলিজেন্ট সলিউসন্স লি.-এর পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক গৌতম সাহা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠানটি বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি-তে তিন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এবং এর ফলে প্রায় ৩৫০ জন মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’-তে স্মার্ট টেলিভশন, স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ, সিসিটিভি ক্যামেরা এবং স্মার্ট হোম এপ্লায়েন্স পণ্য উৎপাদন করবে কিনবো স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড । এজন্য প্রতিষ্ঠানটিকে এক একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিনবো স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এর পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: হাসিব আহমেদ সমঝোতায় স্বাক্ষর করেন। চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠানটি বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি-তে এক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এবং এতে করে ৬৫০ জন মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
জিনোম সিকোয়েন্স, বায়ো-টেকনোলজি, রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার প্রভৃতি নিয়ে কাজ করবে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন। উচ্চ গবেষণাধর্মী কাজ করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটিকে এক একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চুক্তিতে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পক্ষে স্বাক্ষর করেন এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর প্রফেসর সমীর কুমার সরকার। চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠানটি বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি-তে আট মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এবং এর ফলে ১২০ জন মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) জনাব হোসনে আরা বেগম এনডিসি বলেন, কালিয়াকৈরে অবস্থিত ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’ দেশের প্রথম ও বৃহত্তম হাই-টেক পার্ক। ৩৫৫ একর জমিতে স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’-তে আজকের তিনটি প্রতিষ্ঠানসহ সর্বমোট ৪২টি কোম্পানিকে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হলো। ইতোমধ্যে সেখানে ১৪টি কোম্পানি উৎপাদন শুরু করেছে। কোম্পানিগুলো এই পার্কে মোবাইল ফোন এসেম্বলিং ও উৎপাদন, অপটিকাল কেবল, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, ডাটা-সেন্টার প্রভৃতি উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। আজকে বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান তিনটি দ্রুত এই পার্কে তাদের কাজ শুরু করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর ও তিনটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।