ময়মনসিংহের কথা আসলেই সবার আগে যে বিষয়টি মাথায় আসে সেটা হলো বিখ্যাত খাবার মন্ডা। একটা এলাকার বিখ্যাত খাবারগুলোর সাথে মিশে থাকে সেখানকার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। তেমনি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মন্ডা। ১৮২৪ সালে এই মন্ডা প্রথম তৈরী করেন রাম গোপাল নামের একজন ভদ্রলোক। তিনি মন্ডা তৈরীর পর মুক্তাগাছার মহারাজা সূর্যকান্ত চৌধুরীর সামনে পেশ করেন। তখন থেকেই এই মিষ্টান্ন সাধারণ মানুষের পছন্দের তালিকায় স্থানয় পায়।
১৮২৪ সাল থেকেই এই মিষ্টি আপ্যায়নের জন্য রাজপরিবারে যেমন চাহিদা ছিলো তেমনি দেশ বিদেশের বড় বড় নেত্রী স্থানীয় ব্যক্তিদের আপ্যায়নে এই মিষ্টিকে উপস্থাপন করা হতো।
রাশিয়ার জোসেফ স্টালিন থেকে চীনের মাওসেতুং পর্যন্ত এই মন্ডার প্রসংসা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান, ইন্দিরা গান্ধী, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, সুভাষচন্দ্র বসু সহ অনেক গুণীজন এই মিষ্টির প্রসংসা করেছেন।
বাংলাদেশের মানুষ বর্তমানে বই, সংবাদপত্রে মন্ডা সম্পর্কে পড়ে জানতে পারে কিন্তু অনেক জেলায় বা এলাকায় এই মন্ডার স্বাদ মানুষ নিবে তো দূরের কথা চিনেও না। তাই দেশের প্রতিটা জেলায় এই মন্ডাকে পরিচিত করতে ও প্রসার ঘটাতে পারে ই-কমার্স উদ্যোক্তারা। কেননা ই-কমার্সের প্রচারের ফলে দেশে বিদেশে মন্ডাকে এখন প্রচার ও প্রসার করা সম্ভব।
এই সেক্টরে যারা কাজ করতে ইচ্ছুক তারা একত্রিয় হয়ে এই মন্ডাকে দেশে বিদেশে ছড়িয়ে দিতে পারে।এই মন্ডার টেস্ট চাইলেও অন্য কোথাও হুবহু করা সম্ভব নয় তাই এটি ময়মনসিংহ অঞ্চলের উদ্যোক্তাদের জন্য বিশাল বড় সম্ভাবনা বলে মনে করি।
ময়মনসিংহের সাথে যেহেতু রাজধানী ঢাকার দূরত্ব কম তাই সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো যাতায়াত খরচ কম ও সহজেই ঢাকার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব। ময়মনসিংহ অঞ্চলের শিক্ষিত উদ্যোক্তারা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মন্ডাকে ই-কমার্সে নিয়ে আসার চেষ্টা করে তাহলে মন্ডা যেমন পরিচিতি পাবে তেমনি এর চাহিদা বাড়বে।
মুক্তাগাছার মন্ডা বিখ্যাত, তাই এই মন্ডাকে দেশ বিদেশে ছড়িয়ে দেওয়া ময়মনসিংহের তরুন উদ্যোক্তাদের দায়িত্ব। মন্ডার চাহিদা বাড়লে মুক্তাগাছার অনেক মানুষের যেমন কর্মসংস্থান হবে তেমনি তরুণ উদ্যোক্তারা নিজেদের ঐতিহ্যকে দেশে বিদেশে ছড়িয়ে দিয়ে নিজেদের আত্মকর্মসংস্থান করতে পারবে।
তাই এই সেক্টরে ডেডিকেটেড উদ্যোক্তা তৈরি হলে ই-কমার্সে নিজেদের ঐতিহ্য নিয়ে শক্ত একটা অবস্থান তৈরি করা সম্ভব হবে।