ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব কিংবা তার পরবর্তি সময়ের জন্য ডিজিটাল সংযুক্তির জন্য যতটুকু প্রস্তুতির দরকার আমরা তা সম্পন্ন করেছি।এক্ষেত্রে যেসকল ত্রুটি বিদ্যমান আছে তা চলতি বছরের মধ্যে দূর হয়ে যাবে। তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশ ৫জি চালুর বিষয়টি চিন্তাও করেনি কিন্তু বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে ৫জি চালু করতে যাচ্ছে। এই বছরেই সারা দেশে ৪জি যাচ্ছে। ২৩ সালে আসছে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল। ২১ সালেই হাওর-বিল-চর পার্বত্য অঞ্চল ক্যাবল/স্যাটেলাইট সংযোগের আওতায় আসছে।
মন্ত্রী আজ শনিবার ঢাকায় আইইবি’র শহীদ প্রকৌশলী ভবনের কাউন্সিল হলে ” ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)’র উদ্যোগে আয়োজিত চতুর্থ শিল্প বিপ্লব: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট শীর্ষক সেমিনারে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
আইইবি’র প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য ও যোগোযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও আইইবি’র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর, আইইবি’র সম্মানী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু),পিইঞ্জ, আইইবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এইচআরডি) প্রকৌশলী মো. নূরুজ্জামান বক্তৃতা করেন। সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি কেবল চতুর্থ শিল্প বিপ্লবেই সীমিত নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির মাঝে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে যে রূপান্তর ঘটানো দরকার তা নিহিত রয়েছে।
দেশে কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন,৭৩ সালে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়ন ও ইউপিই্উ এর সদস্য পদ অর্জন এবং ৭৫ এর ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জাতির পিতা ডিজিটালাইজেশনের বীজ বপণ করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে কম্পিউটারের ওপর থেকে শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার, অনলাইন ইন্টারনেট চালু করে সাধারণের নাগালে মোবাইল পৌঁছে দিতে মোবাইল ফোনের মনোপলি ব্যবসা বন্ধ করে চারটি মোবাইল কোম্পানিকে লাইসেন্স প্রদান এবং ভিস্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট চালুসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে ডিজিটাইজেশনের রোপিত বীজটিকে চারা গাছে রূপান্তর করেন। ২০০৯ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তারই ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় তা আজ বিরাট মহিরূহে রূপান্তর লাভ করেছে।
কম্পিউটারে বাংলা ভাষার প্রবর্তক জনাব মোস্তাফা জব্বার চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ একেক দেশের জন্য একেক রকম উল্লেখ করে বলেন ড্রাইভারহীন গাড়ী জাপানের জন্য কিংবা যে দেশে জনসম্পদের অভাব তাদের জন্য আনন্দের কিন্তু আমাদের জন্য কর্মীবিহীন পোষাক শিল্প বা ড্রাইভারহীন গাড়ী বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের বিপুল জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে পরিণত করার বিকল্প নেই।
তিনি এই ক্ষেত্রে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রযুক্তি শিক্ষা বাধ্যতা মূলক করতে হবে। আমাদের তরুণ প্রজন্ম অত্যন্ত মেধাবি তাদেরকে আগামী দিনের সম্পদে পরিণত করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যাই আমাদের বড় সম্পদ।
তিনি বলেন পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক মোকাবেলায় বাঙালির পারদর্শীতা সর্বজন স্বীকৃত। কোভিডকালে ডিজিটাল বাংলাদেশের সফলতার ফলে দেশে শতকরা ৭০ভাগ মানুষ ঘরে বসে টেলিমেডিসিন চিকিৎসা নিয়েছে। গ্রামের প্রথম শ্রেণির শিশুটিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে তার শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ২০২২ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ডাকঘরকে ডিডিটাল ডাকঘরে রূপান্তর করার কাজ চলছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।