সিমের পর দেশে ব্যবহৃত মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের মাধ্যমে এই খাতে সুশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা প্রদানের বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টি রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যক্রম শুরু করলো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। আর এই কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণ যেন ভোগান্তির শিকার না হয় সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি ও অপারেটররা একাট্টা হয়ে কাজ করছে বলে জানান মন্ত্রী।
অবৈধ ও নকল হ্যান্ডসেট বন্ধের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বুধবারের মধ্যেই দেশে গ্রাহকের হাতে থাকা সব চালু হ্যান্ডসেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে যেসব নতুন হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে, তার মধ্যে কোনটি অবৈধ হয়ে থাকলে গ্রাহককে জানিয়ে তিন মাস সময় দেয়া হবে। ওই তিন মাসের মধ্যে গ্রাহক তার মোবাইল ফোনটি বৈধ করে নিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেটি নিবন্ধিত হয়ে যাবে। তিন মাস পর অবৈধ হ্যান্ডসেটে কোন সিমই কাজ করবে না।
বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম বলেন, আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকেই দেশে অবৈধ ও নকল হ্যান্ডসেট বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বুধবারই গ্রাহকের হাতে থাকা ব্যবহৃত সব হ্যান্ডসেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে গেছে। একই সঙ্গে ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর)-এর কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, গ্রাহকের জাতীয় পরিচিতি নম্বর ও সিম নম্বরের (এমএসআইএসডিএন) সঙ্গে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি) নম্বর মিলিয়ে এনইআইআরে নিবন্ধন করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে নতুন যেসব মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে, সেগুলো নেটওয়ার্কে সচল রেখেই এনইআইআর-এর মাধ্যমে হ্যান্ডসেটের বৈধতা যাচাই করা হবে। হ্যান্ডসেটটি বৈধ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা নিবন্ধিত হয়ে যাবে। আর যেসব হ্যান্ডসেটে বৈধ আইএমইআই নম্বর থাকবে না, সেগুলোর গ্রাহককে এসএমএস করে তা জানিয়ে দেয়া হবে। এরপর পরীক্ষামূলকভাবে তিন মাস ওই সেট নেটওয়ার্কে সচল রেখে পরে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপারেটরদের পক্ষ থেকে শুরুতে বক্তব্য দেয়া রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিফোন অপারেটর টেলিটক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাব উদ্দিন জানান, আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ তারাও এই প্রক্রিয়ার অংশীদার হবেন।
বক্তব্যে এই কার্যক্রমকে ‘মাইলফলক’ হিসেবে উল্লেখ করে দিনটিকে আনন্দের ও উৎসবের বলে মন্তব্য করেন গ্রামীণফোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াসির আজমান।
আর এই কার্যক্রম দেশে সাইবার অপরাধ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখকে বলে মন্তব্য করেন টেলিযোগাযোগ সচিব আফজাল হোসেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করে সংস্থাটির উপ-পরিচালক জাকির হোসেন খান। অনুষ্ঠানে বিটিআরসি ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত কুমার রায় ছাড়াও সংস্থার কমিশনার ও মহাপরিচালকরা এবং বিটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মতিন ও মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটব মহাসচিব এসএম ফরহাদ সংযুক্ত ছিলেন।