২০২১ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে স্মার্টফোন বিক্রি বছরওয়ারি ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। তবে প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় তা কমেছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের সর্বশেষ মার্কেট মনিটর প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
কভিড-১৯ মহামারীতে মারাত্মকভাবে ধুঁকছে লাতিন আমেরিকা। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার অনেক দেশ যেখানে অর্ধেকের মতো জনসংখ্যাকে টিকার আওতায় এনেছে, সেখানে লাতিন আমেরিকা টিকা কার্যক্রমের প্রাথমিক ধাপে রয়েছে। পর্যাপ্ত টিকার মজুদ করতে না পারায় কবে নাগাদ অধিকাংশ নাগরিককে টিকার আওতায় আনা যাবে তা অস্পষ্ট। করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা এবং প্রলম্বিত লকডাউনে লাতিন আমেরিকার বেশির ভাগ অর্থনীতিরই ভগ্নদশা।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের মুখ্য বিশ্লেষক টিনা লু বলেন, গত প্রান্তিকে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি বা সংকোচন হার ভিন্ন। উপকরণ সংকটে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্রাজিল। এছাড়া লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম দেশটিতে সীমিতসংখ্যক ব্র্যান্ডের উপস্থিতি রয়েছে। অন্যদিকে নতুন ব্র্যান্ডের প্রবেশের ফলে মেক্সিকোর স্মার্টফোন বাজারে দ্রুত প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। এতে অঞ্চলটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজারের স্মার্টফোন বিক্রিতে চাঙ্গা ভাব দেখা গেছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে বেশির ভাগ স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোই দুই অংক এমনকি তিন অংকের প্রবৃদ্ধি পেয়েছে। ভিয়েতনামে কারখানা বিভ্রাটের কারণে লাতিন আমেরিকায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্র্যান্ড ছিল স্যামসাং। সাপ্লাইচেইন সংকট সত্ত্বেও মেক্সিকো ও পেরু বাদ দিয়ে অঞ্চলটির শীর্ষ ব্র্যান্ড স্যামসাং।
লাতিন আমেরিকার বাজারে স্যামসাং শীর্ষ ব্র্যান্ড থাকলেও এক বছরের মধ্যে তাদের বাজারশেয়ার ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে ৩৭ দশমিক ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। লাতিন আমেরিকায় বাজারশেয়ার ও বিক্রি বেড়েছে মটোরোলার। সরবরাহ সংকটের কারণে স্যামসাং যে বাজার হারিয়েছে, তাতে জায়গা করে নিয়েছে মটোরোলা। মেক্সিকোতে বাজার শেয়ারের দিক থেকে শীর্ষস্থান যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানিটির।
এছাড়াও লাতিন আমেরিকার অন্য দেশগুলোতে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছে তারা। তবে ব্যতিক্রম ছিল কলম্বিয়া, যেখানে মটোরোলার বাজার শেয়ার কমেছে। এতে প্রধান ভূমিকা চীনা স্মার্টফোন জায়ান্ট শাওমির। বিক্রির দিক থেকে অঞ্চলওয়ারি দ্বিতীয় স্থান ধরে রেখেছে মটোরোলা। হুয়াওয়ের পতনকে কাজে লাগিয়ে বছরওয়ারি তিন গুণেরও বেশি প্রবৃদ্ধি করেছে শাওমি। লাতিন আমেরিকার বাজারে তৃতীয় স্থান চীনা কোম্পানিটির।
পেরুতে স্যামসাংকে হটিয়ে বাজার নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে শাওমি। কলম্বিয়াতেও স্যামসাংয়ের খানিক নিচেই অবস্থান তাদের। অন্যান্য চীনা প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর কারণে লাতিন আমেরিকায় বাজার নেতা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে শাওমিকে অনেক বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে।
প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে অ্যাপলের মোট বিক্রি কমেছে। তবে একক ব্র্যান্ড হিসেবে শীর্ষস্থান ছিল আইফোন ১১। গত বছর লাতিন আমেরিকার বাজারে প্রবেশ করা চীনা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সফল কোম্পানি অপো। তবে তার ৯০ শতাংশ বিক্রি ছিল মেক্সিকোতে। অন্যান্য দেশেও বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে চীনা কোম্পানিটি।