একটি ফোন তৈরিতে কোন কোন উপকরণ ব্যবহার করা হয় তা জানতে ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা আজব এক পরীক্ষা চালিয়েছেন। একটি হাই-টেক ব্লেন্ডারের মধ্যে ফোন রেখে ব্লেন্ডার চালিয়ে পরীক্ষা চালান তারা।
প্লেমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Plymouth) ওই বিজ্ঞানীরা ব্লেন্ডার দিয়ে ওই মোবাইলটিকে একেবারে গুঁড়ো গুঁড়ো করে দেন এবং তারপর কোন পরিমাণে কী ধরণের উপাদান ফোন তৈরিতে প্রয়োজন হয় তা নির্ধারণ করতে অবশিষ্টাংশের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করেন।
প্লেমাউথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি ভিডিও শেয়ার করে জানিয়েছে, প্রতিটি ফোনে যে বিরল বা তথাকথিত ‘দ্বন্দ্ব’ উপাদানগুলো (conflict elements) ব্যবহার করা হয় তা সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে এবং উপাদানের পুনর্ব্যবহারযোগ্যতা হার বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এই পরীক্ষা করা হয়েছে।
গবেষণাটি পরিচালনার জন্য গবেষকরা গুঁড়ো হয়ে যাওয়া ফোনটিকে ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে একটি শক্তিশালী অক্সিডাইজার, সোডিয়াম পারক্সাইডের সঙ্গে মেশান। এরপর তারা অ্যাসিডে পরিণত ওই উপাদানের সঠিক রাসায়নিক গুণ বা বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হন।
পরীক্ষায় ব্যবহৃত ফোনটিতে ৩৩ গ্রাম লোহা, ১৩ গ্রাম সিলিকন এবং ৭ গ্রাম ক্রোমিয়াম রয়েছে, এর সঙ্গেই আছে ৯০ মিলিগ্রাম রূপো এবং ৩৬ মিলিগ্রাম সোনা। গবেষকরা ৯০০ মিলিগ্রাম টাংস্টেন এবং ৭০ মিলিগ্রাম কোবাল্ট এবং মলিবডেনাম সহ ১৬০ মিলিগ্রাম নিওডিয়ামিয়াম এবং ৩০ মিলিগ্রাম প্রাসেওডিয়ামিয়ামের মতো ‘ক্রিটিকাল এলিমেন্ট’ খুঁজে পেয়েছেন।
‘আমরা সকলেই আমাদের মোবাইল ফোনের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু আমাদের মধ্যে কতজন এটা জানতে চান যে এই ফোনটি আসলে কী কী দিয়ে তৈরি হয়! আফ্রিকার নানা অস্থির অঞ্চল থেকে তুলে আনা টাংস্টেন এবং কোবাল্ট দিয়ে এই মোবাইল তৈরি হয় জানতে পেরে কেমন লাগবে আপনাদের?’ প্রশ্ন করেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ ডাঃ অর্জান ডিজকাস্ত্রা।
এই আজব পরীক্ষাটি খুব স্বাভাবিকভাবেই ভাইরাল হয়ে পড়ে টুইটারে।