ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ভাষা আন্দোলনের পটভূমি সৃষ্টি, ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া, বিকশিত করা এবং বাংলা ভাষাভিত্তিক জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের ফসল।
তিনি বলেন স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলাকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠাসহ বাংলা টাইপ রাইটার যন্ত্রটিও বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই এসেছে। বাংলা এবং বাঙালির জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদানকে জাতি হিসেবে সম্মান জানানো আমাদের দায়িত্ব। বিচারালয়সহ সর্বত্র বাংলা ভাষাকে যথাযথ মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ ঢাকার আগারগাঁওয়ে ডাক ভবন মিলনায়তনে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মোঃ খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এর বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ সিরাজ উদ্দিন, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাহাব উদ্দিন এবং টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মশিউর রহমান বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন বিভিন্ন সংস্থাসমূহে বিশেষ করে ডাক অধিদপ্তরে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিদ্যমান পুরাতন ফরমগুলোকে বাংলায় চালু করার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, বাংলা ভাষার শক্তি অনেক সুদৃঢ়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেছেন, বাংলা ভাষা বাঙালির রক্তের সঙ্গে, মেধা মননের সঙ্গে এবং মায়ের মুখের সঙ্গে মিশে আছে। মন্ত্রী বলেন, পিতার পথ ধরে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলায় ভাষণ দেন। তিনি জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘বিদেশি শক্তি যখন যারাই এদেশ শাসন করেছে, তারা তাদের ভাষা এদেশে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তারা বাঙালির মায়ের মুখের বাংলা ভাষাকে কেড়ে নিতে পারেনি।’ বাংলায় এসএমএস বা নোটিফিকেশন রূপান্তরের পেছনের কাজগুলো চ্যালেঞ্জিং ছিল কিন্তু তা সত্ত্বেও সেটি করা হয়েছে। এই ঘটনাটি মাতৃভাষা, মা-মাটি ও মাতৃভূমির জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে মন্ত্রী উল্লেখ করে বলেন, ২০১৮ সালে আমরা গ্রাহকদের কাছে বাংলায় এসএমএস পাঠাতে মোবাইল অপারেটরদেসমূহকে নির্দেশনা দিয়েছিলাম, ২০২১ সালে আমরা বাংলাকে প্রযুক্তিতে প্রয়োগে উৎসাহিত করতে বাংলা এসএমএস এর মূল্য শতকরা ৫০ ভাগ হ্রাস করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা গতকাল এসএমএস এবং নোটিফেকশন বাংলায় পাঠানোর কার্যক্রম শুরু করেছি। ‘আশা করি অপারেটরসমূহ আগামী জুনের মধ্যে তারা শতভাগ নোটিফিকেশন এবং এসএমএস গ্রাহকদের নিকট বাংলায় পাঠাতে পারবে।’
সভাপতির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বাংলা ভাষাকে পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ ভাষা উল্লেখ করেন।
বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক পেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়ে অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় আমাদের বড় অর্জন এবং বঙ্গবন্ধু ছিলেন এই অর্জনের মহানায়ক।
এর আগে সকালে মন্ত্রী ও সচিবের নেতৃত্বে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও এর অধীন সংস্থার পক্ষ থেকে মগবাজার টিএন্ডটি হাইস্কুলে স্থাপিত শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।