ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, শিক্ষা মৌলিক অধিকার এবং এটি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। ডিজিটাল যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের দায়িত্বও রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। মন্ত্রী ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনের মহাসড়ক তৈরিতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি ফাইভ-জি প্রযুক্তি সম্প্রসারণে মোবাইল অপারেটররা যাতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে সে জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসিকে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁয়ে বিটিআরসি, এটুআই ও অ্যালায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেটের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘কানেক্টিভিটি ফর এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন্স ফর ব্লেন্ডেড এডুকেশন বাংলাদেশ ব্রডব্যান্ড পলিসি-২০২০’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে ডিজিটাল সংযোগ ও মানসম্মত কনটেন্ট অপরিহার্য। ডিজিটাল কনটেন্ট মানে পাঠ্যসূচির পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করা নয়, কনটেন্ট অবশ্যই মানসম্মত হতে হবে। প্রচলিত শিক্ষা শ্রেণিকক্ষ থেকে ডিজিটাল রূপান্তরের কাজ সম্পন্ন করা আবশ্যক বলে তিনি উল্লেখ করেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী তৃণমূল থেকে শুরু করে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দ্রুতগতির ইন্টারনেটের আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ডিজিটাল শিক্ষার জন্য শিক্ষকদেরও ডিজিটাল উপযোগী দক্ষতা প্রদান করতে হবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ডিজিটাল শিক্ষা প্রদানের উপযোগী করতে না পারলে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ডিজিটাল শিক্ষা ছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হবে না।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর সিদ্দিক, এটুআই’র সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী এবং অ্যালায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেটের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান অঞ্জু মঙ্গল বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিটিআরসির অন্যতম মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ। অ্যালায়েন্স ফর এফোর্ডেবল ইন্টারনেটের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর শহীদউদ্দিন আকবর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী ও প্রতিবন্ধীসহ সবার জন্য উচ্চগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্রডব্যান্ড নীতিমালার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ফাইভ-জি প্রযুক্তি সম্প্রসারণে মোবাইল অপারেটররা যাতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে এ বিষয়ে মন্ত্রীর নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে বলে আশ্বস্ত করে বলেন, এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ফাইভ জি সম্প্রসারণ শুরু হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি, ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনসহ শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরেন। তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।