বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা, পরববর্তীতে জেল খানায় চার নেতা হত্যা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ বার হত্যাচেষ্টার অর্থ ছিল বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করে পাকিস্তান বানানো। ১৫ আগস্ট এবং ২১ আগস্টের ঘটনার সাথে স্বাধীনতা বিরোধী জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তির হাত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন জোরদার করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যড়যন্ত্রকারী অপশক্তি এখনো থেমে নেই। তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার পক্ষের সকল শক্তিকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম আয়োজিত ‘আমি বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম জাতীয় কমিটির সভাপতি বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ, বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাস্কৃতিক ফোরামের নির্বাহী সভাপতি মো. আবদুস সামাদ, তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদ মান্নান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর, আওয়ামী লীগ নেতা রেমেন্ড আরেং এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সেক্রেটারি রাশেদুল হাসান শেলী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
জব্বার বলেন, সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়েও বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি কাঠামো দাঁড় করিয়েছেন, প্রাথমিক ও কারিগরি শিক্ষার উপর জোর দিয়েছিলেন, পরমাণু শক্তি কমিশন গঠন করেছেন। দেশের প্রায় প্রতিটি সেক্টরকে যুগের চাহিদা মেটানোর উপযোগী করে গড়ে তোলার উদ্যোগ তিনি গ্রহণ করেন। বস্তুত পক্ষে একবিংশ শতাব্দীর আজকের জীবন যাপন এবং ৪১ সালে যেখানে বাংলাদেশ পৌঁছাবে তার বীজ বপন করে গেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাড়ে আঠারো বছরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথ বেয়ে তা অঙ্কুরিত করে বৃক্ষে রূপান্তরিত করেছেন।
তিনি বলেন, অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লব যে বাংলাদেশ মিস করেছে সেই বাংলাদেশ ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, আইটিইউ এবং ইউপিইউ’র সদস্যপদ অর্জন করেছে বঙ্গবন্ধুর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের হাত ধরে। বঙ্গবন্ধু সূচিত তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের এই অভিযাত্রা পঁচাত্তরের পর দীর্ঘ ২১ বছর থেমে যায়। বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশেকে পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের নেতৃত্বের জায়গায় উপনীত করেছেন, বলেন মোস্তাফা জব্বার।
‘বাংলাদেশ ডিজিটাইলেজেশনে আজ পৃথিবীর অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার পিতৃভূমি কেনিয়াকে এগিয়ে নিতে এবং ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ডিজিটাল ইন্ডিয়া বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে অনুসরণের কথা যখন বলেন তখন আমাদের গর্ব হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে পনের আগস্ট শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
সভাপতির বক্তৃতায় বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বঙ্গবন্ধুকে বিরল প্রতিভাবান আখ্যায়িত করে বলেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় জীবনের বড় কলঙ্ক হয়ে থাকবে।