আইফোন ১৪ উন্মোচিত হতে আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখে ফোনটি উন্মোচিত হওয়ার কথা থাকলেও এটি আরও এক সপ্তাহ পিছিয়ে এ মাসেরই ১৬ তারিখে করা হয়েছে। আর প্রি অর্ডার নেওয়া শুরু হবে ৯ তারিখ থেকে। প্রতি বছরই নতুন আইফোনে থাকে নানা রকমের আপডেট। কোনও কোনও বছর থাকে বড় রকমের পরিবর্তন। সংযোজন আর বিয়োজনের এই বিবর্তনে প্রতি বছরই এটি স্থান করে আছে বিশ্বের সেরাতম ফোনের তালিকায়। কি কি পরিবর্তন থাকছে এবারের আইফোনে? ম্যাকরিউমরের বরাতে দেখে নেওয়া যাক এবারের আইফোন ১৪তে বড় কোনও পরিবর্তনগুলো থাকছে।
এবারের আইফোন ১৪-তে আকৃতির পরিবর্তন থাকছে। ৫.৪ ইঞ্চি সাইজের মিনি আইফোনের জনপ্রিয়তা ক্রমাগত কমতে থাকায় এবার এই আকৃতির ফোনটি আর থাকছে না। অন্যান্য সাইজের আইফোনগুলো থাকবে। আইফোনে ফেস আইডি’র ব্যবহার শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে। এ বছর সেখানেও কিছু পরিবর্তন আসছে। আইফোন ১৪ প্রো মডেলগুলোতে সম্ভবত থাকছে না ফেস আইডি। অন্যান্য মডেলে এটি থাকার কথা।
ক্যামেরার ক্ষেত্রে আইফোন ১৪ আর আইফোন ১৪ প্রো মডেলের ক্যামেরার পুরুত্ব বেড়েছে। এছাড়া বেগুনি রঙ-এর নতুন আরেকটি শেড যোগ হতে পারে আইফোনের কালারে।
এ পর্যন্ত সব আইফোনেরই ধারকের উপাদান ছিল স্টেইনলেস স্টিলের ফ্রেম। এবার সেটার বদলে থাকতে পারে টাইটানিয়ামের ফ্রেম। স্পিকার ও মাইক্রোফন গ্রিলে নতুন ডিজাইনের আভাস পাওয়া গিয়েছে। এবারে আইফোনে নতুন একটি বাস্পীয় চেম্বার থার্মাল সিস্টেম থাকতে পারে। এটি আইফোনে দ্রুতগতির চিপ এবং ৫জি কানেক্টিভিটির কারণে তৈরি হওয়া তাপকে কমিয়ে আনবে। এবারের আইফোনে কোনও ফিজিক্যাল সিম স্লট ব্যবহার নাও হতে পারে। এর বদলে ব্যবহার করা হবে ইসিম স্লট।
প্রতিবারের আইফোনেই ক্যামেরাতে থাকে পরিবর্তন। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। আলট্রা ওয়াইড ক্যামেরাতে নতুন কিছু ইমপ্রুভমেন্ট থাকছে। এছাড়াও এবারের আইফোনে পেরিস্কোপ জুম লেন্স যোগ হতে পারে। তবে এটি এবার যোগ না হলেও আগামী বছর যোগ হতে পারে। আইফোন প্রো মডেলগুলোতে থাকবে ৪৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা এবং ৮কে ভিডিও রেকর্ডিং সুবিধা।
আইফোন ১৪-এর মডেলগুলোতে এ১৫ চিপ থাকার কথা। সেখানে আইফোন প্রো মডেলে ব্যবহার করা হবে এ১৬ চিপ। এছাড়া কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন এক্স৬৫ চিপ ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে। এটি একটি দ্রুতগতির ১০-গিগাবিট ৫জি মডেম যার রয়েছে দ্রুতগতির কানেক্টিভিটি স্পিড। এছাড়াও এক্স ৬৫ চিপের মাধ্যমে আইফোন স্যাটেলাইটের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারে। সেলুলার বা ওয়াইফাই কোনও সংযোগ যখন থাকবে না এমন সময় কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে টেক্সট মেসেজ পরিষেবাটি ব্যবহার করা যাবে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে।
এবারের আইফোন এবং অ্যাপল ওয়াচে কার ক্র্যাশ ডিটেকশন যোগ হওয়ার কথা। এখানে একটি অ্যাকসিলারোমিটার যোগ করা থাকবে। এটি অভিকর্ষ আর গতির সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবহারকারীর গাড়ি কোনও দুর্ঘটনায় পড়েছে কিনা তা নির্ণয় করে নিজে থেকেই জরুরি সেবায় ফোন করে সাহায্য চাইবে।
নতুন আইফোনের ডিসপ্লেতে ব্যবহার করা হতে পারে ১২০ হার্জের রিফ্রেশ রেট। বডি ডিজাইনে আইফোন ১৩-এর মতোই ফ্ল্যাট এজ ডিজাইন ব্যবহার হওয়ার কথা। আর ওয়াইফাই-এ ব্যবহার করা হতে পারে ওয়াইফাই ৬ই। আর মেমরি থাকতে পারে দুই টেরাবাইট।
আইফোন ১৪ প্রো আর প্রো ম্যাক্স-এর ধার আরেকটু সরু হতে পারে। এবারের আইফোনে লাইটেনিং পোর্ট বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কিছু মডেলে হয়তো এই পোর্টটি ব্যবহার করা হতে পারে। র্যামের ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন নেই।
আইফোন ১৪-এর মূল্য শুরু হওয়ার কথা ৭৯৯ ডলার থেকে। আইফোন ১৩-ও একই মূল্য থেকে শুরু হয়েছিল। মূলত বিক্রির হার ঠিক রাখতে অ্যাপল তার প্রাথমিক পর্যায়ের ফোনগুলোর দাম বাড়াবে না বলে মন্তব্য করে সংবাদ মাধ্যমটি।