অনলাইনে উগ্র আচরণ ও চরমপন্থী কনটেন্ট মোকাবেলায় বিশেষ নীতিমালা গ্রহণ এবং এ-সংক্রান্ত গবেষণায় মনোযোগ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে মেটা ও ইউটিউব। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজে এক বৈঠকে প্রথমসারির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, নিজস্ব প্লাটফর্ম থেকে সহিংস কনটেন্ট মুছে দিয়ে এবং তরুণদের মধ্যে অনলাইনের আচরণবিধি নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রচার চালিয়ে সাইবার জগতে চরমপন্থা মোকাবেলার চেষ্টা তারা বাড়াবে। বিদ্বেষ ছড়ানো, মিথ্যাচার ও সহিংসতা উসকানোর মতো সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগে বেশ কয়েক বছর ধরেই সমালোচনার মুখে আছে ইউটিউব ও ফেসবুকের মতো সোশ্যাল প্লাটফর্মগুলো।
রয়টার্স বলছে, হোয়াইট হাউজের ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের প্রতি অনলাইনে বর্ণবাদ ও চরমপন্থা মোকাবেলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রযুক্তি শিল্পের বিশেষজ্ঞ ও ভুক্তভোগী ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন ওই বৈঠকে।
বৈঠকে উগ্রবাদী আচরণ ও সহিংসতার প্রশংসা করে এমন কনটেন্ট মুছে দিতে নিজস্ব নীতিমালার পরিধি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউটিউব। নির্মাতা কোনো উগ্রপন্থী দলের সঙ্গে জড়িত না থাকলেও কনটেন্ট বিপজ্জনক হলে তা সরানোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলছে এ ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম।
রয়টার্স জানিয়েছে, সহিংসতার ডাক দেয়, এমন কনটেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে ইউটিউবের নীতিমালায়। তবে গত বছর ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিল দাঙ্গায় অংশ নেয়া সশস্ত্র দলগুলোর পক্ষে প্রচারণা চালায়, এমন অনেক ভিডিওর ক্ষেত্রে সে নীতিমালা প্রয়োগ করেনি প্লাটফর্মটি।
ইউটিউবে সশস্ত্র উগ্রপন্থী দলগুলোর পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে, এমন ৪৩৫টি ভিডিওর খোঁজ মে মাসেই পেয়েছিল গবেষণা সংস্থা ‘টেক ট্রান্সপারেন্সি প্রজেক্ট’। এর মধ্যে ৮৫টি ভিডিও পোস্ট করা হয় ক্যাপিটলে গত বছরের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পপন্থীদের হামলার পর।
নতুন নীতিমালার অধীনে ইউটিউব প্রশ্নবিদ্ধ কনটেন্ট ব্যবস্থাপনার কৌশল বদলাবে কিনা, সে প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মুখপাত্র জ্যাক ম্যালন। তবে নীতিমালা প্রয়োগের পরিধি বাড়বে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া অনলাইনে তরুণদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে এবং তাদের মিথ্যাচার ও ভুয়া প্রচার চিহ্নিত করার কৌশল শেখাতে নতুন প্রকল্প চালু করার কথাও ইউটিউব বলেছে।
সহিংসতা চিহ্নিত করে মোকাবেলায় সহযোগিতা করতে স্কুল ও ছোট প্রতিষ্ঠানের জন্য নিজস্ব আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি এবং মেশিন লার্নিং টুলের সাশ্রয়ী সংস্করণ বানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উইন্ডোজ নির্মাতা মাইক্রোসফট। আর ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা ‘মিডলবেরি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ সেন্টার অন টেরোরিজম, এক্সট্রিমিজিম অ্যান্ড কাউন্টার টেরোরিজম’-এর গবেষকদের সঙ্গে জোট বাঁধার ঘোষণা দিয়েছে।
গত বছর ৬ জানুয়ারির দাঙ্গায় উসকানি ঠেকাতে অ্যালফাবেট, ফেসবুক ও টুইটারের ভূমিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন এসব কোম্পানির কর্মকর্তারা।