সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে ইমোতে প্রতারণা হ্যাকিংসহ নানা অভিযোগ থাকলেও এখন চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা । রাত ১২ টা বাজলেই শুরু হয় তাদের এই কর্মকান্ড।
দেখা গেছে, দেহ ব্যবসা চালাতে ইমোতে খোলা হয়েছে একাধিক গ্রুপ। সেখানে দেহ পসারিনীদের নগ্ন ছবিসহ বিস্তারিত তথ্য ও ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। সরাসরি নিলামের মধ্যমে এই সকল মেয়েদের কিছূ সময়ের জন্য কিনে নিতে পারেন যে কেও । নিদিষ্ট বিকাশ নম্বরে টাকা দিলেই পছন্দ মত সঙ্গী পাওয়া যায় ।
তবে সুনির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা না থাকায় এই পেজ ও ওয়েবসাইটগুলো কে বা কারা পরিচালনা করছে, সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনলাইনভিত্তিক এই গ্রুপ গুলো বাসায় বা ফ্ল্যাট এবং হোটেলে যৌনকর্মী সরবরাহ করার কথা বলছে। এমনকি শত ভাগ সততা ও গোপনীয়তার সঙ্গে কাজ করার নিশ্চয়তাও দেওয়া হচ্ছে।
বিশেষ করে মামা, চাচা, ভাগিনা, ভাইস্তে, ছোট ভাই বা ছেলে বানিয়ে বাসায় অথবা হোটেলে নিয়ে থাকতে পারেন। যেভাবে চান, সেভাবেই করা যাবে। আর কষ্ট করার দরকার নাই। ইনবক্সে ‘হাই বা হ্যালো’ বললে স্বয়ং ক্রিয়ভাবে একটি ফিরতি বার্তা আসে। উত্তর দিলেই শুরু হয় দরদাম। ‘বাসায় কি একা? করতে অস্থির ? কলেজ ও ভার্সিটির ছাত্র ? স্ত্রী কাছে নেই অথবা বিদেশে? তুমি কি আমার শরীর চাও?
https://www.youtube.com/watch?v=zvQcBIHvA3I&t=59s
এখনই যোগাযোগ করেন। আমি আছি আপনাদের জন্য।‘কাজের কথা ছাড়া আজাইরা কথা বলে বিরক্ত করলে ডাইরেক্ট বকা মারতে বাধ্য হব। রিয়েল সেক্স ফুল নাইট ১৫০০ টাকা, ভিডিও সেক্স ৫০০ টাকা, ফোন সেক্স ৩০০ টাকা, চ্যাট সেক্স ২০০ টাকা।’ উপরের মন্তব্যগুলো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ইমো একটি অ্যাকাউন্টের পোস্ট থেকে নেওয়া।
এক ইমো যৌনকর্মী জানান, ‘রাস্তায় খাড়াইলে দালালগো টাকা দেওন লাগে। পুলিশ আইস্যা ঝামেলা করে। কিন্তু আমার এক বান্ধবী আমারে একটা ইমো আইডি করে দিছে। ওহানে ইচ্ছামতো কিছু লিইখা দিলে কাস্টমার পাওন যায়। আমার ওই বান্ধবী ইমো আরও কিসের যেন গ্রুপ বানাইছে। ওহান থেইক্যাও কাস্টমার পাওন যায়।’
অনুমতি ছাড়া অনলাইনে শারীরিক সম্পর্কের জন্য খদ্দের খোঁজা কিংবা যৌন ব্যবসা বাংলাদেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শিব্বির আহমেদ।
তিনি জানান, দন্ডবিধি, সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল ও পুলিশ কমিশনারের অধীনে এ ধরনের অপরাধের মামলা ও বিচার করা যায়। অপরাধ প্রমাণিত হলে বিচারিক হাকিম দন্ড দিতে পারেন। সাজার মেয়াদ অপরাধের ধরন অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক সৌদি প্রবাসী জানান, আমি দীঘদিন ধরে সৌদিতে থাকি । আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে ভিডিও কলে সেক্স করে এই গ্রুপে জয়েন্ট করি । সারাদিন কাজ করে কিছূ সময় এইখানে দিতাম । ৫১০ টাকা বিকাশে দিয়ে একদিন একজনকে ভিডিও কলে নেই । তার সাথে আমি ৩০ মিনিট ভিডিও কলে সেক্স করি । পরে সে তার আইডি আমাকে দেই আমি আমার আইডি তাকে দেই । সে আমার সাথে কথা বলে সেটা রেকর্ড করে রাখে এবং আমাকে ব্লাকমেইল করে । ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা সে আমার কাছে খেকে নেই ।
প্রবাসীদের অনেকেই দেশে থাকা স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে মোবাইল ফোনের অ্যাপ ‘ইমো’ ব্যবহার করেন। তাদের একটি বড় অংশ প্রযুক্তি বিষয়ে ততটা ওয়াকিবহাল নন। এমন ব্যক্তিদেরই খুঁজে বের করে চক্রের সদস্যরা। দীর্ঘদিন থেকে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে ইমো প্রতারণা মাধ্যমে দেশি ও প্রবাসে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে ইমো প্রতারক চক্র। দীর্ঘদিন ধরে এই অপরাধ চলতে থাকলেও তেমন কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দিনদিন বেড়েই চলেছে এই প্রতারক চক্রের দৌরাত্য।