শেখ রাসেল দিবস ২০২২ উপলক্ষে “শেখ রাসেলের নির্মম হত্যাকাণ্ড: ন্যায় বিচার, শান্তি ও প্রগতির পথে কালো অধ্যায়” শীর্ষক একটি জাতীয় সেমিনার ১৮ অক্টোবর ২০২২ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর কর্তৃক ঢাকার আগারগাঁও শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) হল অব ফেমে আয়োজিত হয়।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, এমপি। সভাপতির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শহীদ শেখ রাসেল তাঁর দশ বছর জীবনে অনেক কষ্ট, বেদনা এবং সহনশীলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। তিনি বলেন শেখ রাসেলের বেদনা, কষ্ট এবং তাঁর আবেগ অনুভূতির কথা লিখেছেন শেখ রাসেলের বড় বোন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর “আমাদের ছোট রাসেল সোনা” বইটিতে। শেখ রাসেল নির্মল প্রাণবন্ত আমাদের মাঝে চিরদিন থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন শেখ রাসেলের এই মর্মান্তিক হত্যাকান্ড শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয়। যদি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হতো তাহলে নিষ্পাপ শিশু শেখ রাসেলকে কেন তার মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে খুনিরা সেইদিন নির্মমভাবে হত্যা করলো। কারণটা ছিল শেখ রাসেলকে হত্যার মধ্য দিয়ে তারা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক উত্তরসূরিদেরকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। সে কারণে আমরা বলি যে শেখ রাসেলের এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ন্যায় বিচার শান্তি এবং প্রগতির পথে সবচেয়ে বড় কালো অধ্যায় রচিত হয়েছিল।
পলক বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আবার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, নিরাপদ বাংলাদেশ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য গড়ে তুলতে চাই। অসমাপ্ত স্বপ্নগুলো বাংলাদেশের কোটি কোটি শিশু, কিশোর-কিশোরী তাদের স্বপ্ন পূরণের মধ্য দিয়ে আমরা সকলে মিলে শেখ রাসেলকে আমরা অমর করে রাখতে চাই। তিনি বলেন আজকে প্রধানমন্ত্রী ৫ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব উদ্বোধন করেছেন। তিনি শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি আরও বলেছিলেন খুনিরা ভেবেছিল শেখ রাসেলকে হত্যা করলে হয়তো বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং আমাদের শিশুর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের তাদের কণ্ঠরোধ করতে পারবে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকরা যতদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধরে রাখবে।
উক্ত আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এন এম জিয়াউল আলম পিএএ, সিনিয়র সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সূচনা ফাউন্ডেশন এর সিওও ডা: সাকি খোন্দকার এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা সেন্টার ফর জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এর পরিচালক অধ্যাপক ড. তানিয়া হক। উক্ত সেমিনারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: মশিউর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও উপস্থাপক মিথিলা ফারজানা। সেমিনারে শেখ রাসেল- এর ওপর নির্মিত বিভিন্ন তথ্য-চিত্র ও অডিও ভিজ্যুয়াল প্রদর্শনসহ শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে নির্মিত থিম সংগীত পরিবেশন করা হয়।
এর আগে সকালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, এমপি আগারগাঁও আইসিটি টাওয়ারে শেখ রাসেল- এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরবর্তীতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কর্তৃক শেখ রাসেল দিবস ২০২২ এর উপলক্ষে আয়োজিত হয় একটি আনন্দ শোভাযাত্রা।
উল্লেখ্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে “শেখ রাসেল দিবস ২০২২ এর উদ্বোধন ও শেখ রাসেল পদক” প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত হন।