গত মাসে ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে টুইটার কিনে নেন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান ইলন মাস্ক। মালিকানা গ্রহণের পর টুইটারে বিভিন্ন পরিবর্তন আনেন তিনি। ছাঁটাই করেন কর্মীদের, বেশি বেশি সময় কাজ করাসহ নানা কিছু চাপিয়ে দেন কর্মীদের ওপর। এত কিছুর পরও আবার অর্থকড়ির ক্ষেত্রে ধাক্কা খেলেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। অনেকটাই কমে গেল সম্পদ। এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হারিয়েছেন ইলন মাস্ক।
ধনকুবেরদের ইনডেক্স অনুযায়ী বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে ইলন মাস্কের সম্পদ সবচেয়ে কমেছে। তবে এরপরও এখনো শীর্ষ ধনী তিনি।
ইলন মাস্ক টেসলার ব্যবসায়ও ধাক্কা খেয়েছেন। বাজার থেকে ৩ লাখ ২১ হাজার গাড়ি ফিরিয়ে নিতে হয়েছে সংস্থাটিকে। কারণ, গাড়িগুলোর পেছনের আলো ঠিকমতো কাজ করছিল না। এ ছাড়া আরও ৩০ হাজার গাড়ির এয়ার ব্যাগ কাজ করছে না ঠিকমতো। এসব কারণে টেসলার শেয়ার কমতে শুরু করেছে। ৩ শতাংশ শেয়ার কমে গেছে টেসলার এ বছর, যা গত ২ বছরে সবচেয়ে কম।
এক বছর আগেও ইলন মাস্কের সম্পদ ছিল ৩৪০ বিলিয়ন ডলারের আশপাশে। সেটা কমে এসে এ বছর ঠেকেছে ১৭০ বিলিয়ন ডলারে। এ বছর পকেটে থেকে খসেছে ১০১ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্য মাস্ক নিজের প্রতিষ্ঠানগুলোর কিছু শেয়ার বিক্রি করেছেন। তবে শুধু মাস্ক নন, শেয়ারবাজারে এ বছর ক্ষতির মুখে পড়েছেন মার্ক জাকারবার্গ, বার্নার্ড আর্নল্ড, গৌতম আদানীসহ অন্যান্য ধনকুবেরও। বছরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে তাঁদের।
ইলন মাস্কের সংস্থা টেসলা গাড়ির পাশাপাশি সোলার ব্যাটারিও বিক্রি করে। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেস এক্স–এরও মালিক তিনি। সম্প্রতি কিনেছেন টুইটার। টুইটারের ৭৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে তাঁর হাতে। টুইটারে মালিকানা পেয়েই নানা বদল আনেন মাস্ক। কয়েক সপ্তাহে টুইটারের বহু কর্মীকে ছাঁটাই করেছেন। সাড়ে সাত হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পর সংস্থার কর্মীরা ইলনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন। এরপর ছাঁটাই বন্ধ করে নিয়োগ করার কথা ভাবছেন মাস্ক।
গত সোমবারের হিসাবে টেসলার শেয়ার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ১৬৭ দশমিক ৮৭ হয়েছে। ২০২০ সালের নভেম্বরের পর এটি সর্বনিম্ন। গত মাসের হিসাবে ২০ শতাংশ কমেছে শেয়ারের দাম, এ বছর কমেছে ৫৮ শতাংশ। সব মিলিয়ে এ বছর প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের সূচকে প্রায় ৩০ শতাংশ পতন হয়েছে।