আধুনিক প্রযুক্তিতে অগ্রগামি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং আইটি কোম্পানীগুলোর মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে সরকার ‘বাংলাদেশ আইটি কানেক্ট পোর্টাল –দক্ষিণ কোরিয়া (www. Kr.itconnect.gov.bd)’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ডেস্ক আজ চালু হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ডিজিটাল মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এই ডেস্কের উদ্ধোধন করেন।
আইসিটি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম দেলওয়ার হোসেন, বাংলাদেশে-কোরিয়ার কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সির (কেওটিআরএ) মহাপরিচালক জ্যাং ওন কিম (Jong Won Kim), স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ, ইডিজিই প্রকল্প পরিচালক ড. মুহাম্মদ মেহেদী হাসান, বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ এবং উল্কাসেমির চীফ অপারেটিং অফিসার মিজান রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পলক বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছরে অর্থনীতিসহ নানা ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতা বাংলাদেশ ও কোরিয়ার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। দুই দেশের ব্যবসা- বাণিজ্যের আকার ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করে, যা পূরবর্তী বছরের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৭১ শতাংশ বেশি। একই সময়ে কোরিয়ায় বাংলাদেশ রপ্তানি করে ৬৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি।
২০৪১ সালে স্মার্ট জাতি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য অর্জনে কোরিয়ার সহযোগিতা কামনা করে পলক বলেন, বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগে (এফডিআই) বিশ্বে কোরিয়া অবস্থান ৫ম এবং আগামীতে আইটি খাতে তাদের বিনিয়োগ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য সহায়ক হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে সরকার ইতোমধ্যে আইটি খাতে বিনিয়োগের অনুকুল পরিবেশ তৈরি করেছে। তিনি বাংলাদেশের হাই-টেক পার্কে ও আইটি খাতে কোরিয়ার কোম্পানীগুলোকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
পলক বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই সময়ে মানুষকে কারিগরি ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলার কোনো বিকল্প নেই। তিনি কোরিয়া ও বাংলাদেশের যৌথভাবে দীর্ঘ মেয়াদে স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচি গ্রহণের ব্যাপারে প্রস্তাব করেন। এবং এ ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের কেওটিআরএ এবং দেশটিতে বাংলাদেশ দূতাবাসকে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করবে বলেও জানান।
প্রতিমন্ত্রী দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানীগুলোতে বাংলাদেশের মেধাবী তরুণদের নিয়োগদানের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, বৈশ্বিক কোম্পানীগুলোতে নিয়োগকৃত বাংলাদেশীরা সুনামের সাথে কাজ করছে। দক্ষিণ কোরিয়া প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণদের তাদের এ দেশে পরিচালিত কোম্পানীগুলোতে অথবা দেশে সরাসরি নিয়োগ দিতে পারে।
উল্লেখ্য, আইসিটি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) এনহান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি (ইডিজিই) প্রকল্প ও দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশ দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত ভার্চুয়াল ডেস্কটি হবে মূলত বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) আইটি কানেক্টিভিটি হাব, যা দু’দেশের আইটি কোম্পানীর সাথে ব্যবসায়িক সংযোগ, সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা, দক্ষিণ কোরিয়ার বাজার থেকে বিনিয়োগ আনায় ভূমিকা পালন করবে।
‘বাংলাদেশ আইটি কানেক্ট পোর্টাল- দক্ষিণ কোরিয়া’ প্লাটফর্ম চালুর মধ্য দিয়ে সরকার এ পযর্ন্ত চার দেশে অনুরূপ চারটি প্লাটফর্ম তৈরি করলো। বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান এবং দুই দেশের আইটি কোম্পানীর মধ্যে সংযোগ স্থা্পনে অনুঘটকের ভূমিকা পালন কাজ করবে এ প্লাটফর্ম। প্লাটফর্মটিতে বাংলাদেশের ৮০টিরও বেশি কোম্পানীর প্রোফাইল রয়েছে। দেশে কোরিয়ান বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রযুক্তি ও বিপিও ব্যবসার সম্প্রসারণের অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা দেশের ডিজিটাল তথা স্মার্ট অর্থনীতির বিকাশের পথ সুগম করবে।