ক্রমাগত পরিবেশের উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়েই জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। অপো বিশ্বাস করে, বিজ্ঞানের সাথে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব। এর ধারাবাহিকতায়, বছরের পর বছর গবেষণা ও বিশ্লেষণের পর, এমডব্লিউসি ২০২৩ -এ ‘অপো ক্লাইমেট অ্যাকশন রিপোর্ট: ক্লাইমেট প্লেজেস অ্যান্ড লো কার্বন ডেভেলপমেন্ট স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক প্রতিবেদন উন্মোচন করে অপো। প্রতিবেদনে ২০৫০ সালের মধ্যে নিজেদের বৈশ্বিক কার্যক্রমে প্রথমবারের মতো কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বৈশ্বিক কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান ডেলয়েটের সহযোগিতায় করা এ প্রতিবেদনে পাঁচটি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, যেখানে লো-কার্বন ম্যানুফ্যাকচারিং, পণ্য থেকে কার্বনের পরিমাণ হ্রাস করা, কার্বন নিঃসরণ কম হয় এমন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা, কার্বন নিঃসরণ ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় খাত সংশ্লিষ্ট মানদণ্ড নিয়ে অন্যদের সাথে অংশীদারিত্ব করার ক্ষেত্রে কাজ করবে অপো।
এ নিয়ে অপো’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী টনি চেন বলেন, “কার্বন নিরপেক্ষেতা অর্জনে আমাদের লক্ষ্যপূরণে প্রয়োজন হবে সংকল্প ও ধৈর্য। আমরা যেভাবে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, ঠিক একইভাবে ‘টেকনোলজি ফর ম্যানকাইন্ড, কাইন্ডনেস ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’ লক্ষ্য নিয়ে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনেও আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।”
বিশ্বের ৬০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে বিস্তৃত কার্যক্রম ও ব্যবহারকারী নিয়ে টানা দুই বছর বিশ্বের চতুর্থ সর্ববৃহৎ ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে অপো। প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্যিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি সবুজ উৎপাদন ও ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য উদ্ভাবনী উপায় খুঁজে বের করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জ্বালানি সাশ্রয় ও নিঃসরণ হ্রাস সংশ্লিষ্ট উদ্যোগের মাধ্যমে ২০২২ সালের মধ্যে অপো এর কার্যক্রমে বছর প্রতি ৬ হাজার টন গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনে।
আমরা এমন এক ডিজিটাল যুগে বাস করছি যেখানে ক্রমবর্ধমানভাবে বাড়ছে ডেটা স্টোরেজ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও হাই-পারফরমেন্স কম্পিউটিং -এর চাহিদা। এ কারণে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে চলেছে ডেটা সেন্টার এবং জিপিইউ সার্ভার ক্লাস্টারের জ্বালানি ব্যবহার। জ্বালানি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ও কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে অপো এর ডেটা সেন্টারে জিপিইউ সার্ভার ক্লাস্টারের জন্য ইমারশন কুলিং প্রযুক্তি স্থাপন করছে। ইমারশন কুলিং প্রযুক্তি সরাসরি তরল পদার্থের মাধ্যমে কার্যক্রম চলাকালীন উৎপন্ন তাপ দূর করে।
এছাড়াও, নিজেদের পণ্যের প্যাকেজ ডিজাইন করার ক্ষেত্রে অপো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত থ্রিআর+ওয়ানডি (রিডিউস, রিইউজ, রিসাইকেল ও ডেগ্রেডেবল) গ্রিন প্যাকেজিং নীতি অনুসরণ করে। ২০২৩ সালে ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে শুরু করে অপো’র স্মার্টফোনের প্যাকেজিং থেকে প্রায় সকল প্লাস্টিক দূর করা হয়েছে, একে শতভাগ বায়োডিগ্রেডেবল ও আরও পরিবেশ-বান্ধব করে তোলা হয়েছে।
অপো এর পণ্যের স্থায়িত্ব বাড়াতে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অর্জন করেছে। উদাহরণস্বরূপ, অপো’র মালিকানাধীন ব্যাটারি হেলথ ইঞ্জিন প্রযুক্তি ১৬শ’ চার্জিং সাইকেল পর্যন্ত মূল ব্যাটারির সক্ষমতার ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বজায় রাখতে পারে, যা ব্যাটারির দীর্ঘস্থায়িত্ব বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও, ই-বর্জ্য দূষণের সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য অপো বিভিন্ন পণ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য সিস্টেম তৈরি করেছে এবং ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর পুনরায় ব্যবহার উৎসাহিত করার জন্য দেশ এবং আন্তর্জাতিক উভয় বাজারে ট্রেড-ইন পরিষেবা চালু করেছে।
২০২০ সাল থেকে, অপো এর কারখানায় গুরুত্বপূর্ণ মেশিনগুলোতে জ্বালানি সাশ্রয়ী আপগ্রেড নিয়ে এসেছে। অপো কার্বন-নিরপেক্ষ ডেটা সেন্টার নির্মাণেও কাজ করছে। অপো’র নিজেদের নির্মিত প্রথম ডেটা সেন্টারে – অপো বিনহাই বে ডেটা সেন্টার, শতভাগ পুননবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করা হয় এবং অত্যাধুনিক লো-কার্বন প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিতে কাজ করা হয়। পণ্যের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতার মানোন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে অপো; পাশাপাশি, প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য পরিবেশ-বান্ধব পণ্য উন্মোচন করা। এ লক্ষ্যে, পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমাতে অপো এর পণ্যের লাইফ সাইকেল ম্যানেজমেন্টে টেকসই উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে।
সবুজ ভবিষ্যতের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার পথ সময় সাপেক্ষ হলেও, অপো ইতোমধ্যেই ক্লাইমেট অ্যাকশন প্রতিবেদন ও লো-কার্বন ডেভেলপমেন্ট কৌশলের মাধ্যমে এ লক্ষ্য অর্জনে নিজেদের যাত্রা শুরু করেছে। এক্ষেত্রে, সবার সাথে কাজ করার মাধ্যমে উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে নিজেদের ভূমিকা পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অপো।