কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির দুনিয়ায় নতুন যুগের সূচনা করেছে। চ্যাটজিপিটির উত্থান তার একটি উদাহরণ। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে কার্যক্রমের ধরন পরিবর্তন করতে শুরু করেছে। অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানেও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।
২০৩০ সালের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কম্পিউটারের সক্ষমতা ১০ গুণ বাড়িয়ে দেবে। দৃশ্যমান হবে প্রযুক্তির দুনিয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান হু হওকুন।
হু বিশ্বাস করেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চাহিদা বেড়ে যাবে। পরিবর্তন আনবে কম্পিউটারের ক্ষমতাতেও। একই সময়ের মধ্যে ৫০০ গুণ বেশি কাজ করতে সক্ষম হবে কম্পিউটার। নতুন সুযোগ উন্মোচিত হবে সামনে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সংযোগ দুই হাজার কোটি অতিক্রম করবে। বিস্তৃতি ঘটবে লো-ল্যাটেন্সি অ্যাপ্লিকেশনের। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন অনুসারেই হবে অগ্রগতি। নতুন ব্যবসায়িক নীতিমালায় মেটাভার্স ও ইমেজিং থিওরি ব্যবহৃত হবে। প্রযুক্তি এখনো বিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেলেও সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছে তেমন আকর্ষণীয় মাত্রা লাভ করেনি।
তিনি জানান, আগামীতে আরো পরিবর্তন আসবে। আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পরিবর্তনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পরিবর্তন আসবে ইন্টারনেট পরিষেবার মধ্যেও। সেক্ষেত্রে আরো নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হবে সব ক্ষেত্রে। জ্বালানি খাতে দ্রুত বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন হু। কার্বন নিঃসরণ প্রক্রিয়া কমে আসবে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার, যা এরই মধ্যে দৃশ্যমান হওয়া শুরু হয়েছে।
ফাইভজি প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তিকে দ্রুত গ্রহণ করে নিচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সামনের দিনগুলোয় তা ব্যক্তি পর্যায়ে ছড়িয়ে যাবে। প্রযুক্তি গ্রহণের কারণে দীর্ঘমেয়াদে সুফল বয়ে আনবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়বে। বিবর্তনের কারণে সৌর ও বায়ু শক্তিকে আরো ভালোভাবে কাজে লাগানো যাবে।
হুয়াওয়ে বর্তমানে সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করছে। চ্যাটজিপিটির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর প্রযুক্তি বিপুল সম্ভাবনাময়। হুয়ের দাবিকে অনেকটাই যৌক্তিক মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বর্তমান সময়ের প্রতিবন্ধকতাগুলো এর মধ্য দিয়ে দূরীভূত হবে। হার্ডওয়্যারজনিত সমস্যাও মিটে যাবে। সাত বছরের মধ্যে বর্তমান গতি প্রতি সেকেন্ডে ১০০ মেগাবাইট থেকে উন্নীত হয়ে প্রতি সেকেন্ডে ১০ গিগাবাইটে পরিণত হবে।
পরিবর্তন প্রভাব ফেলবে মানুষের জীবনযাত্রায়। গতিশীল ইন্টারনেটের অর্থ কিছু নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাবের পথকে উন্মুক্ত করে দেয়া। ক্লাউড কম্পিউটিং, ক্লাউড গেমিং ও স্বচালিত গাড়ির মতো চিন্তাগুলো এখন ইন্টারনেটের গতি ও কানেক্টিভিটির পরিবর্তনের অপেক্ষায় রয়েছে। বাস্তবিক কোনো পরিবর্তনের সঙ্গে বিপুলভাবে পরিবর্তিত হবে দিকগুলো। এআইয়ের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য অনেক খাতও সুবিধা পাবে। কেউ প্রত্যাশা করেনি চ্যাটজিপিটির আবির্ভাবকে। কিন্তু কনটেন্ট তৈরির দুনিয়ায় এরই মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন চলে এসেছে।
অধিকাংশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান চ্যাটজিপিটির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে। জিপিটি-ফোর নিয়ে এসেছে নতুন মাত্রা। যদি সাত বছরের মধ্যে আরো বড় ধরনের পরিবর্তন আসে, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। অবশ্য চ্যাটজিপিটির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিপিইউর ক্ষেত্রে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছে। কিছুটা থেমে থাকবে অগ্রগতি, তবে তা সাময়িক অসুবিধা। চাহিদা বাড়ার সঙ্গে উৎপাদনকারীরা তাদের সক্ষমতা বাড়াবে।