চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে আইফোন বিক্রিতে অবনমন দেখতে পেয়েছে অ্যাপল। মূলত অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ডিভাইস কেনার চাহিদা কমে গেছে। এর ফলে তৃতীয় প্রান্তিকে বড় লোকসানে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে কুপারটিনোর এ প্রযুক্তি জায়ান্ট।। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে কীভাবে কোম্পানিটি প্রবৃদ্ধি অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে সে বিষয়টিও মুখ্য হয়ে উঠেছে।
রেফিনিটিভের পূর্বাভাস অনুসারে, অ্যাপলের দ্বিতীয় প্রান্তিকে আয় ১ দশমিক ৬ শতাংশ কমতে পারে। ২০১৬ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের পর এটা কোম্পানিটির আয়ে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পতন। আইফোন বিক্রি দ্বিতীয় প্রান্তিকে কমেছে ২ শতাংশের বেশি। অথচ ভিজিবল আলফার বিশ্লেষণ অনুসারে, ২০২২ সালের একই সময়ে বিক্রি বেড়েছিল ৩ শতাংশ। একইভাবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বেড়েছিল ১ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রান্তিকওয়ারি হিসাবে মেটা, অ্যালফাবেট ও মাইক্রোসফটের ব্যবসা লাভজনক প্রমাণিত হয়েছে। টেকনালাইসিসের প্রতিষ্ঠাতা বব ওডোনেলের দাবি, অ্যাপল সাধারণত ম্যাক্রো-ইকোনমিক প্রবণতার দ্বারা দ্রুত তাড়িত হয় না। ফলে আরো কিছুদিন এ পরিস্থিতি চলতে থাকবে।
আগামী মাসে আইফোন ১৫ আসার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। সেখানে যুক্ত হবে সর্বাধুনিক ইউএসবি পোর্ট ও নতুন কিছু মডেল। ফলে জুলাই-অক্টোবর প্রান্তিকে আইফোনের বিক্রি কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অ্যাপল সাধারণত প্রান্তিকওয়ারি আয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করে না। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কোম্পানিটি অন্তত ব্যাখ্যা করবে, কীভাবে তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করবে পরবর্তী ফোনের মধ্যে। কোম্পানি এতক্ষণ পর্যন্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক আলোচনা এড়িয়ে চলেছে।
বিশেষ করে অ্যালফাবেট ও মাইক্রোসফটের দৌরাত্ম্যের বিপরীতে খুব জোরেশোরে আগ্রহ দেখায়নি প্রতিষ্ঠানটি। তার পরও গত মাসে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, অ্যাপল নিভৃতেই নিজস্ব ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর বৃহত্তর ভাষিক মডেল তৈরি করার ক্ষেত্রে, যার নাম অ্যাজাক্স। আইফোন বিক্রিতে মন্থর গতির প্রধান কারণ মূলত আমেরিকায়। আমেরিকায় কোম্পানিটির আয় কমেছে ৬ শতাংশ। অ্যাপলের তৃতীয় বৃহৎ বাজার চীনে। সেখানে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার গতির বিপরীতে অ্যাপলের বিক্রি সন্তোষজনক ছিল না। যদিও অ্যান্ড্রয়েডের বিপরীতে অ্যাপল তুলনামূলক ভালো করেছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনে সার্বিকভাবে স্মার্টফোন রফতানি কমেছে ২ দশমিক ১ শতাংশ। পাইপার স্যান্ডলার বিশ্লেষকদের দাবি, অধিকাংশ বিনিয়োগকারী চীনের মন্থরতাকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন। কিন্তু চীনে অ্যাপলের অবস্থান এখন পর্যন্ত ভালো। কোম্পানি হয়তো সামান্য পরিমাণ আইফোন বিক্রি হ্রাস দেখতে পারে। যদি বিক্রিজনিত কোনো মন্থরতা দেখা দেয় চীনে, তাহলে ভারতের বিক্রি দিয়ে তা পুষিয়ে নেয়া যাবে। কারণ উদীয়মান বাজার হিসেবে ভারতে আইফোন বিক্রি বেড়েছে। ম্যাক ও আইপ্যাড বিক্রি যথাক্রমে ১০ দশমিক ৬ এবং ১১ দশমিক ২ শতাংশ কমানোর পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। কিন্তু পরিষেবা ব্যবস্থা হিসেবে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর, অডিও ও ভিডিও স্ট্রিমিং পরিষেবা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।