টেলিকম খাতের টেকসই উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকে এক ছাতার নিচে এসে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, টেলিকম খাতের টেকসই উন্নয়ন জরুরি। অর্থনীতিতে এটি শক্তিশালী উদীয়মান একটি খাত। এর প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে দক্ষিণ এশীয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেতৃত্বে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে এক ছাতার নিচে এসে জোরালোভাবে কাজ করতে হবে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দক্ষিণ এশীয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কাউন্সিলের (এসএটিআরসি) ২৪তম বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার এসব কথা বলেন। রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানের স্কাই বলরুমে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বের আয়োজন করা হয়। সম্মেলন চলবে আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, টেলিকমের মতো বিস্তৃত খাতে উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অভিজ্ঞতা বিনিময় খুবই জরুরি। তিনদিনের এ সম্মেলন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর টেলিযোগাযোগ খাতে নিয়োজিত ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ করে দিয়েছে।
টেলিযোগাযোগ খাতে বাংলাদেশের সাফল্যের তথ্য তুলে ধরে স্পিকার বলেন, ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে বাংলাদেশ তৃণমূলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দিয়েছে। এতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্যের নানা সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। এজন্য আমরা ৯টি অ্যাকশন প্ল্যানও তৈরি করেছি।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে এসএটিআরসির অংশীদার দেশগুলোর মধ্যে টেলিযোগাযোগে বেস্ট প্র্যাকটিস বাস্তবায়ন করবে। সুযোগগুলো ভাগাভাগি করে নিয়ে ডিজিটাল কানেকটিভিটিকে ভবিষ্যতের জন্য টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতা সৃষ্টিতে অবদান রাখবে।
সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। মন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের যে অর্জনগুলো আমরা চাই, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল সংযুক্তি। ২০০৮ সালে সাকুল্যে মোবাইল ব্যবহার করতেন চার কোটি মানুষ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল মাত্র সাড়ে ৭ লাখ। এখন তা ১৩ কোটিতে ছুয়েছে। দেশের ৯৮ শতাংশ এলাকা ফোর-জিতে সংযুক্ত। এখন ফাইভ-জির জন্যও আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তি চমৎকারভাবে সমন্বিত করে বিটিআরসি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমার প্রত্যাশা, ডিজিটাল সংযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল ব্যাক-বোন তৈরি করবো, এটিকেই আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করবো।
সম্মেলনের গুরুত্ব তুলে ধরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, এ সম্মেলন থেকে আর্থসামাজিক উন্নয়নে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অভিজ্ঞতা আমরা যেমন নেবো, তেমনি অন্যরাও আমাদের অভিজ্ঞতা নেবে। কেননা বাংলাদেশ এরই মধ্যে বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
ইরানের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান আলি রেজা পেহলভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন এশিয়া প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটির মহাসচিব ম্যাসানরি কোন্দ ও বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার। এবারের সম্মেলনে ৯টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।