বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (এআই) বৈশ্বিক ব্যয় ২০২৮ সালের মধ্যে দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে ৬৩ হাজার ২০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। ২০২৪ থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত এআইয়ের পেছনে বার্ষিক ব্যয়ের গড় প্রবৃদ্ধি হবে ২৯ শতাংশ।
এ প্রবৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে এআই সক্ষমতার অ্যাপ্লিকেশন, অবকাঠামো, সংশ্লিষ্ট আইটি ও ব্যবসায়িক পরিষেবা ও বিশেষ করে জেনারেটিভ এআই (যা পাঠ্য, চিত্র বা ডাটার কনটেন্ট তৈরি করে)।
সম্প্রতি বাজার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) বিশ্বব্যাপী এআই ও জেনারেটিভ এআই ব্যয় নির্দেশিকার পূর্বাভাসে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদিও জেনারেটিভ এআইয়ে ব্যয় অন্যান্য এআই অ্যাপ্লিকেশনের তুলনায় কম হবে, তবে এটি সমগ্র এআই বাজারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হয়ে উঠবে।
আইডিসির বিশ্লেষকরা বলছেন, গত ১৮ মাসে জেনারেটিভ এআই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আগামী পাঁচ বছরে এটি বার্ষিক ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ হারে বাড়তে পারে।
তাদের ধারণা, পূর্বাভাসের সময়সীমার শেষ নাগাদ জেনারেটিভ এআইয়ে ব্যয় পৌঁছবে ২০ হাজার ২০০ কোটি ডলারে। পরিমাণটি হবে এআইয়ে সামগ্রিকভাবে ব্যয় করা অর্থের ৩২ শতাংশ।
আইডিসির ওয়ার্ল্ডওয়াইড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) অ্যান্ড অটোমেশন রিসার্চের ভাইস প্রেসিডেন্ট রিতু জ্যোতি বলছেন, ‘এআই বিশ্বজুড়ে ব্যবসার ক্ষেত্রে সত্যিকারের পরিবর্তন এনেছে। কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতিসাধনে এআই ব্যবহার করছে, যেমন কর্মীদের পরিচালনা করা, গ্রাহকের সঙ্গে যুক্ত থাকা, ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া ও শিল্প উদ্ভাবনে এআইয়ের ব্যবহার বাড়ছে। এআই ব্যবসাগুলোকে সুনির্দিষ্ট সুবিধা ও মান উন্নয়নে সহায়তা করছে। উদ্ভাবনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হিসেবে দাঁড়িয়েছে এআই। মানুষের কাজ সহজসাধ্য করার ক্ষেত্রে এআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পরিকল্পনা ও পূর্বাভাস দেয়া সহজ করার মাধ্যমে সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নেয়া সহজতর করছে।’
আইডিসির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, পূর্বাভাসের সময়ের এআই বাজারে ব্যয়ের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র হবে সফটওয়্যার। ২০২৪ থেকে ২০২৮ সালের বেশির ভাগ সময়ে মোট এআই ব্যয়ের অর্ধেকেরও বেশি হবে সফটওয়্যারে। আবার এই সফটওয়্যারের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ব্যয় হবে এমন অ্যাপ্লিকেশনগুলোয় যা কাজ সম্পাদন করতে বা সমস্যার সমাধান করতে এআই ব্যবহার করে। আরেকটি বড় অংশ যাবে প্লাটফর্মগুলোয়, যা এআই অ্যাপ্লিকেশনগুলো বিকাশ ও পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও পরিষেবা সরবরাহ করে।
এছাড়া কিছু অর্থ ব্যয় হবে এমন সফটওয়্যারে যা অ্যাপ্লিকেশন তৈরি ও চালুর জন্য প্রয়োজন হয়। আর বাকি অর্থ যাবে এআই সিস্টেমগুলো কার্যকরভাবে চালাতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামোকে সমর্থন করে এমন সফটওয়্যারে।
সেই সঙ্গে এআই কার্যকরভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও পরিকাঠামোয় সর্বাধিক অর্থ ব্যয় হবে। পূর্বাভাসের সময়ে আর্থিক পরিষেবা শিল্প, বিশেষ করে ব্যাংকগুলো এআইয়ে সর্বাধিক ব্যয় করবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
আইডিসির গবেষকরা বলছেন, ২০২৮ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্র এআইয়ে ৩৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার ব্যয় করবে, যা হবে বিশ্বব্যাপী এআই ব্যয়ের অর্ধেকেরও বেশি।