রুশ-ফরাসি ব্যবসায়ী এবং টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও পাভেল দুরভকে গতকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় প্যারিসের বুর্জে বিমানবন্দরে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অজ্ঞাত সূত্র উল্লেখ করে জানিয়েছে টিএফওয়ান টিভি এবং বিএফএম টিভি। খবর রয়টার্স।
টিএফওয়ান তার ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, দুরভ তার ব্যক্তিগত জেটবিমানে ভ্রমণ করছিলেন। একটি প্রাথমিক তদন্তের অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে ফ্রান্সে একটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।
টিএফওয়ান এবং বিএফএম উভয়ই জানিয়েছে যে, টেলিগ্রামের মডারেটরদের ঘাটতির ব্যাপারে তদন্ত করা হবে এবং পুলিশ মনে করে যে, মডারেটর না থাকায় মেসেজিং অ্যাপটি অবাধে অপরাধমূলক কার্যকলাপ চালাতে পেরেছে।
প্রায় এক বিলিয়ন ব্যবহারকারীর সঙ্গে এনক্রিপ্টেড রয়েছে টেলিগ্রাম। বিশেষ করে রাশিয়া, ইউক্রেন এবং প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রজাতন্ত্রগুলোতে এই অ্যাপ বেশ প্রভাবশালী। ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক এবং উইচ্যাটের পরে প্রধান সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে টেলিগ্রামকেও ধরা হয়।
এ ঘটনায় টেলিগ্রাম এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশের কোনো মন্তব্যও পাওয়া যায়নি।
রাশিয়ায় জন্ম নেয়া দুরভ ২০১৩ সালে তার ভাইয়ের সঙ্গে টেলিগ্রাম অ্যাপটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার আরেকটি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম থেকে বিরোধীদের বের করে দেয়ার জন্য রুশ সরকারের চাওয়া তিনি মেনে নেননি বলে প্ল্যাটফর্মটি বিক্রি করে ২০১৪ সালে রাশিয়া ত্যাগ করেন দুরভ।
রাশিয়া থেকে প্রস্থান এবং তার কোম্পানির জন্য একটি বাড়ি খোঁজার ব্যাপারে দুরভ গত এপ্রিলে আমেরিকান সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে বলেছিলেন, আমি কারো নির্দেশ অনুসরণ করার চেয়ে স্বাধীন হতে চাই।
২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করার পর যুদ্ধ এবং সংঘাতের চারপাশের রাজনীতি সম্পর্কে উভয় পক্ষের কাছেই কখনো গ্রাফিক কখনো বিভ্রান্তিকর বিষয়বস্তুর প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে টেলিগ্রাম।
কিছু বিশ্লেষক প্ল্যাটফর্মটিকে ‘ভার্চুয়াল যুদ্ধক্ষেত্র’ বলে আখ্যা দিয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি এবং তার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রুশ সরকারও অ্যাপটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্যারিসে তাদের দূতাবাস দুরভের চারপাশের পরিস্থিতি সম্পর্কে স্পষ্ট করেছে। অন্যদিকে, পশ্চিমা মানবাধিকার সংগঠনগুলো দুরভের মুক্তির দাবি জানিয়েছে।