টেক জায়ান্ট হুয়াওয়েকে ব্যাপক সমর্থন দিতে একাত্ম হচ্ছেন চীনা সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বলছেন, তারা অ্যাপলের পণ্য বয়কট করে এখন থেকে হুয়াওয়ের পণ্য কিনবেন। হুয়াওয়ের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এভাবেই মার্কিন পণ্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন চীনের দেশপ্রেমিক ভোক্তারা।
চীনের সঙ্গে অব্যাহত বাণিজ্যযুদ্ধের অংশ হিসেবে হুয়াওয়েকে নানাভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। হুয়াওয়ের যেকোনো যন্ত্রাংশ ও স্মার্টফোন বিক্রি করতে চাইলে সেই মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। এ পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে হুয়াওয়ের ব্যবসা বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন টেক জায়ান্ট গুগল জানিয়েছে, তারা হুয়াওয়ের সঙ্গে কিছু ব্যবসা স্থগিত করেছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে কিছু বিধিনিষেধ আরোপের সময় পেছানোর ঘোষণা দিয়েছে। আর এর ফলে গুগলসহ অন্য মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী ৯০ দিন হুয়াওয়ের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে।
এ পরিস্থিতিতে চীনের সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা হুয়াওয়ের পক্ষে জোরালো অবস্থান গ্রহণ করেছেন। চীনা মাইক্রো ব্লগিং সাইট উইবোতে একটি হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে জানানো হয়েছে, ‘হুয়াওয়েকে চিপের ক্ষেত্রে মার্কিন সাপ্লাই চেইনের ওপর নির্ভর করার কোনো প্রয়োজন নেই।’ হ্যাশট্যাগটি প্রায় পাঁচ কোটিবার দেখা হয়েছে। উইবোতে অনেকেই অ্যাপলের পরিবর্তে হুয়াওয়ের ডিভাইস কেনার ঘোষণা দিয়েছেন।
চীনে অ্যাপলবিরোধী মনোভাব কতটা বিস্তৃত, তা স্পষ্ট নয়। তবে একজন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, অনলাইনের বিষয়গুলোকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়ার কিছু নেই। ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান মা বলেন, এটা ঠিক যে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি কেন্দ্র করে জাতীয়তাবাদী মনোভাব চাঙ্গা হচ্ছে এবং এর ফলে যদি অ্যাপল কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাতে আমি অবাক হব না। কিন্তু চীনের অনেক ব্যবহারকারীর কাছে এখনো অ্যাপলের পণ্য ও মান উচ্চ অবস্থানেই রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যেন অনলাইনে কিছু বাকপটু ব্যক্তির সমালোচনার ওপর ভিত্তি করে বিষয়গুলোকে অতি সাধারণীকরণ না করি।
যদিও তথ্য-উপাত্ত বলছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চীনে ৩০ শতাংশ কম আইফোন সরবরাহ করেছে অ্যাপল। চীনে কোম্পানিটির বাজার অংশীদারিত্ব ১০ দশমিক ২ থেকে ৭ দশমিক ৪ শতাংশে নেমেছে।
তবে প্রতিষ্ঠানটি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।