টেক জায়ান্ট অ্যাপল আজ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করতে যাচ্ছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের আয় গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হবে বলে প্রত্যাশা করছে কোম্পানিটি। গত সেপ্টেম্বরে আইফোনের ১৬ সিরিজ রিলিজের পর চীনে ডিভাইসটির শক্তিশালী চাহিদা এ প্রবৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে অ্যাপল।
অ্যাপল বলছে, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে আইফোনের আয়ের ইতিবাচক প্রতিবেদনটি বিনিয়োগকারীদের আইফোন ১৬-এর চাহিদা সম্পর্কে ধারণা দেবে। উল্লেখ্য ডিভাইসগুলো অ্যাপলের চতুর্থ প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেষে প্রকাশ পায়। ফলে নতুন অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক সম্পর্কে কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কী বলছেন, তার ওপর প্রধান মনোযোগ থাকবে এ প্রতিবেদনে। উদ্বেগ রয়েছে যে কোম্পানিটি তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ফিচারগুলো প্রকাশ করতে খুব বেশি সময় নিলে আইফোনের বিক্রির বহুল প্রত্যাশিত এআই নেতৃত্বাধীন ‘সুপার-সাইকেল’ দুর্বল করতে পারে। প্রযুক্তিবিদদের মতে, অ্যাপল এআইয়ের ক্ষেত্রে এখনো পিছিয়ে আছে, কারণ স্যামসাং ও মাইক্রোসফটের মতো প্রতিযোগীরা দ্রুত নতুন অ্যাপ্লিকেশন বের করছে, যা জেনারেটিভ এআইয়ের চাহিদা বৃদ্ধি করছে।
এআই নেতৃত্বাধীন সুপার-সাইকেল শব্দটি এমন একটি সময়কে বোঝায়, যেখানে এআই প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ ও চাহিদা বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে বিক্রয়কে বাড়িয়ে তুলতে পারে। বিনিয়োগকারী ও বিশ্লেষকরা জানতে চান, অ্যাপল এ সম্ভাব্য চাহিদাকে পুঁজি করে এআই ফিচারগুলোর প্রবর্তনকে ত্বরান্বিত করার পরিকল্পনা করছে কিনা।
আইফোন ১৬ চালু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্রের গ্রাহকদের জন্য ইংরেজি ভাষায় নতুন এআই ফিচারগুলো সীমিত আকারে প্রকাশ শুরু করে অ্যাপল। তবে ফিচারগুলো ইউরোপ ও চীনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাজারে আইফোনগুলোয় ব্যবহারযোগ্য নয়। অথচ অ্যাপল চীনের বাজারে হুয়াওয়ে, ভিভো, শাওমি ও অনরের মতো বড় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয়। তবে অ্যাপল ম্যাক কম্পিউটারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ব্যবহারকারীদের জন্য কিছু ফিচার প্রকাশ করেছে ও এপ্রিলে এর পরিসর বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ গ্রুপের (এলএসইজি) বিশ্লেষকদের অনুমানের ওপর ভিত্তি করে সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিকে কোম্পানিটি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বিক্রি বাড়ার পূর্বাভাস দেখিয়েছে। এ প্রবৃদ্ধি দুই প্রান্তিক ধরে আইফোনের বিক্রি কমে যাওয়ার প্রবণতাকে ভেঙে দেবে বলে প্রত্যাশা প্রযুক্তিবিদদের। এ বিষয়ে বিনিয়োগ গবেষণা ফার্ম বার্নস্টেইনের বিশ্লেষক টনি স্যাকোনাঘি বলেছেন, ‘আইফোন ১৬-এর চাহিদা কতটা শক্তিশালী হবে, তা ডিসেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিক ও পরবর্তী অর্থবছর (২০২৫) উভয়ের ক্ষেত্রেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
এলএসইজির মতে, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে অ্যাপলের আয় বাড়বে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ আর বৃহত্তর চীনে আয় ৬ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়বে। রয়টার্স বলছে, এ সময় কিছু আইফোন মডেল অফিশিয়াল প্রকাশের আগে অনলাইন প্লাটফর্ম পিনডুওডুওতে ১০ শতাংশ ছাড়ে পাওয়া গেছে। পিনডুওডুও অ্যাপলের অনুমোদিত খুচরা বিক্রেতা নয়, তাই অ্যাপল তার দামের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না। আইডিসির তথ্যানুযায়ী, চীনের বাজারে ১৬ সিরিজ ও আইফোনের কম দাম সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে অ্যাপলকে দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার হিস্যা অর্জনে সহায়তা করেছে।
এদিকে একই সময় আইপ্যাডের বিক্রি ১০ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৭০৯ কোটি ডলারে পৌঁছানোর প্রত্যাশা করছেন প্রযুক্তিবিদদরা।