ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রযুক্তি উপযোগী দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে নিরাপদ ইন্টারনেট অপরিহার্য। এই লক্ষ্যে লাগসই করণীয় নির্ধারণ করে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজটি একক কোন বিভাগ ও সংস্থার কাজ নয়।
তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজটি সমন্বিত উদ্যোগে এগিয়ে নিতে নব গঠিত ডিজিটাল নিরাপত্তা সংস্থা এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং করণীয় শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান।
মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আলোচিত হওয়ার তিন বছর আগে ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কাজ শুরু করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাংলাদেশে প্রথম করবে এটাও কেউ ভাবেনি। ডিজিটাল জগৎ তার পরিধি এবং তার নিরাপত্তা একটি বিশাল বিষয়। এটা নিয়ে বিতর্ক করার সুযোগ নেই। আগামীর বৈশি^ক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির প্রয়োজনে আমি যখন আমার শিশুটিকে প্রোগ্রামিং শিখাব, ওয়েব সাইড থেকে যখন এ বিষয়ক অ্যাপস ডাউন লোড করতে বলবো সেই ক্ষেত্রে আমার দায়িত্ব হচ্ছে ৫ বছরের শিশু থেকে নতুন প্রজন্মকে যেন নিরাপদ ইন্টারনেট দিতে পারি। যদি না পারি তাহলে আমি জেনে শুনে অপরাধ করছি। একটি খারাপ জায়গায় জেনে শুনে নতুন প্রজন্মকে ঠেলে দিচ্ছি।
একদিকে ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের কথা বলব অন্যদিকে নিরাপত্তার কারণে ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন করে আমরা জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার উপযোগী মানুষ তৈরি করতে পারব না উল্লেখ করেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
সরকারী কাজে ডট বিডি ডোমেইন ছাড়া ই – মেইল ব্যবহারের বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রসংগ উল্লেখ করে জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, সরকারের লক্ষ্য সাধারণ মানুষের জীবন যাপন, সমাজ অথবা প্রশাসন তাদের নিরাপত্তার কথা। সামনের দিনে পৃথিবীর যুদ্ধটাও ডিজিটাল যুদ্ধ হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই ক্ষেত্রে ব্যাপক সক্ষমতা অর্জন করার প্রয়োজন আছে। সামনের বিস্ময়কর প্রযুক্তির ফলে ড্রাইভার বিহীন গাড়ী চলবে, রোবট গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজে মানুষের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে উল্লেখ করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, সরকার ডিজিটাল প্রযুক্তি চায় কিন্তু মানুষকে বাদ দিয়ে নয়। আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি চাই মানুষের জীবন যাপনকে সহজ করার জন, জীবন যাপনকে উন্নত করার জন্য। ডিজিটাল বাংলাদেশের শ্লোগান ঐখানে যেখানে প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা সেই জায়গায় পৌছাতে চাই। সেই প্রত্যন্ত গ্রামে স্বাস্থ্য সেবা পৌছাতে চাই।
মন্ত্রী প্রযুক্তি দিয়ে প্রযুক্তিকে এবং সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে প্রযুক্তিকে নিরাপদ রাখার প্রয়োজনীয় ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, গত তিন মাসে ২২ হাজার পর্নো সাইট, আড়াই হাজারেরও বেশী জোয়ার সাইট বন্ধ করা হয়েছে, টিপ টপ নামের একটি অ্যাপ ২ লাখেরও বেশী ভিডিও নামিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।
আইসিটি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে এবং এটুআই এর পলিসি এডভাইজার আনীর চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য অপরাজিতা হক, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক,ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক মো: রাশেদুল ইসলাম এবং বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভিসি ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। কর্মশালায় মূক্ত আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে অংশ নেন ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশকমিশনার মনিরুল ইসলাম এবং আইএসপিএবি‘র সভাপতি মোহাম্মদ আমিনুল হাকিম।